আলো বসলেও কার্জন গেট দেখভালে খামতি

দশ মাস হল আলোয় ফিরেছে বর্ধমানের গৌরব বিজয় তোরণ। লোকমুখে যা কার্জন গেট নামেই পরিচিত।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০২:০১
Share:

কার্জন গেটের গায়ে পসরা ঝুলিয়ে ব্যবসা চলছে এখনও। ছবি: উদিত সিংহ

দশ মাস হল আলোয় ফিরেছে বর্ধমানের গৌরব বিজয় তোরণ। লোকমুখে যা কার্জন গেট নামেই পরিচিত। আলো লাগানোর জন্য গত পুরবোর্ডকে সাধুবাদ জানালেও এখনও উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে, মনে করেন শহরের অনেকেই। তাঁরা চাইছেন, বর্ধমান শহরের ‘প্রতীক’ হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা এই গেটকে শৈল্পিক ভাবে সাজিয়ে তোলা হোক। সেই সঙ্গে কার্জন গেটের ইতিহাস সম্পর্কেও সচেতন করা হোক।

Advertisement

বর্ধমান পুরসভার সচিব জয়রঞ্জন সেন বলেন, ‘‘পর্যটকদের কাছে কার্জন গেটকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য পুরসভার পরিকল্পনা রয়েছে। নতুন বোর্ড এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবে।’’ বর্ধমানের বিদায়ী চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল খোকন দাসও বলেন, ‘‘গত বোর্ড এ বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়েছিল। ফের পুরসভায় ক্ষমতায় এলে কার্জন গেট-সহ লাগোয়া এলাকাকে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করব।’’

বছরখানেক আগে কার্জন গেটকে আলোয় ফেরাতে সরব হন নাগরিকদের একাংশ। তার পরেই নড়েচড়ে বসে বর্ধমান পুরসভা। চলতি বছরের গোড়ায় কার্জন গেট আলোকিত করে তোলে বর্ধমান পুরসভা। গেটের চারপাশে ৫০টি ‘এলইডি স্টিক’ বসানো হয়। সে জন্য পুরসভার খরচ হয় প্রায় ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। বর্ধমানের আইনজীবী কমল দত্তের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘আলো লাগানো হলেও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক ভাবে হয় না। সে কারণে মাঝে-মধ্যেই কার্জন গেট অন্ধকারে ডুবে যায়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটা এলইডি স্টিক জ্বলে না। কার্জন গেটের মাথায় যে মূর্তি আছে সেখানেও আলো প্রয়োজন।’’

Advertisement

গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড থেকে বিসি রোডের দিকে যাওয়ার সময়ে রয়েছে বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই তোরণ। লন্ডনের সিয়ন হাউসের গেটের ধাঁচে তৈরি এই তোরণের দু’পাশে সিঁড়ি রয়েছে। তার দরজা সব সময় বন্ধ থাকে। বর্ধমানের ইতিহাস সন্ধিৎসু গিরিধারী সরকারের মতে, ‘‘ওই সিঁড়ি ব্যবহার করে কার্জন গেটের উপরে উঠতে দিলে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।’’ কার্জন গেটের পাশে একটি দোকানের মালিক উত্তমকুমার সাউয়ের দাবি, ‘‘সন্ধের সময়ে কার্জন গেটের দিকে কেউ তাকাত না। এখন নিজস্বী তোলেন অনেকে!’’ পাশেই একটি স্বর্ণ বিপণির কর্তা সঞ্জীব চৌধুরীর দাবি, ‘‘কার্জন গেট থেকে ৫০ ফুট এলাকা সব কিছু থেকে মুক্ত রাখা হোক।’’ আর একটি বস্ত্র বিপণির কর্তা রায়চাঁদ সুরানার কথায়, ‘‘আলো লাগানোর জন্য ব্যবসায়ীরাও সাধুবাদ জানিয়েছেন।’’

তবে নানা রঙের আলো নিয়ে খুশি নন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক সৈয়দ তনভীর নাসরিন। তাঁর কথায়, ‘‘কার্জন গেটে পুরসভা আলো লাগিয়ে খুব ভাল কাজ করেছে। কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিরুচি, নানা রঙের আলো না লাগিয়ে শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভাবা যেত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন