অঙ্গদপুরের নবকিশোর সঙ্ঘের পুজো। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও পুজো শুরু হয়েছে দেবীর স্বপ্নাদেশে। কোথাও বা বাসিন্দাদের চাহিদা মেনেই সূত্রপাত পুজোর। বিভিন্ন পরিবার ও ক্লাবে আয়োজিত বাসন্তী পুজোগুলিকে কেন্দ্র করে জমজমাট শিল্পাঞ্চল।
সন্তান লভের আশায় ১৯৪৫ সালে বারবনির জামগ্রামে বাসন্তী পুজোর শুরু করেছিলেন রাম রাউত। পারিবারিক সেই পুজোর মণ্ডপে এখন গ্রামের সকলেই ভিড় করেন। পরিবারের নবীন সদস্য নিমাই রাউত জানান, পুজোর কটা দিনে জমে ওঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
আশ্রমিক মতে পুজো হয় ডিসেরগড়ের চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে। বর্তমান সদস্য বিমান চট্টোপাধ্যায় জানান, প্রায় ৭০ বছর আগে গুরুর নির্দেশে পরিবারের পূর্বপুরুষ অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে পুজোর সূত্রপাত। ইকরায় চট্টোপাধ্যায় বাড়ির পুজো প্রায় ১৬০ বছরের পুরনো। এই পুজো ঘিরে একটি জনশ্রুতি রয়েছে। শোনা যায় প্রায় ১৬০ বছর আগে পরিবারের পূর্বপুরুষ খনিকর্মী বিজয় চট্টোপাধ্যায় কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছলিনে। বাড়ির কাছেই হাত, মুখ ধোয়ার জন্য নামেন বিজয়বাবু। পুকুর থেকে উঠতেই দেখেন এক নাবালিকা তাঁর কাছে খাবার চাইছে। তিনি মেয়েটিকে বাড়ি আসতে বলেন। কিন্তু বাড়ির চৌকাঠে পৌঁছতেই মেয়েটি অদৃশ্য হয়ে যান। ওই রাতেই বিজয়বাবুকে স্বপ্নে দেবী জানান, বাড়ির সামনেই যেন পুজো হয়। পরিবারের বর্তমান সদস্য বুড়োবাবু জানান, পুজোর পাশাপাশি নবমী ও দশমীর রাতে যাত্রা বিশেষ আকর্ষণ। এক বাসিন্দা জানান, প্রতি বছরই যাত্রাপালা না দেখলে মন ভরে না। সালানপুরের দনার্দন সায়ের গ্রামে রায় বাড়ির পুজোর বয়স ৮০ বছর। পরিবার সদস্য মন্টুবাবু জানান, এলাকাবসীর চাহিদা মেটাতেই শুরু হয় পুজোর।
বিভিন্ন সংগঠন ও ক্লাবেওপুজোর আয়োজন করা হয়েছে । বার্নপুর অ্যথলেটিক ক্লাবের পুজো ২৭ বছর অতিক্রান্ত হল। ক্লাবের তরফে নান্টু পাল ও হেমন্ত দে’রা জানান দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্রের তহবিল তৈরির জন্য পুজো শুরু করা হয়। বার্নপুর মসজিদ রোডে খেয়ালি সঙ্ঘের পুজো ৪৬ বছর পুরনো। মূলত এলাকাবাসীর চাহিদাতেই পুজো শুরু হয় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দা বুড়ো সরকার।
এ ছাড়াও পাণ্ডবেশ্বরের বৈদ্যনাথপুর পল্লিমঙ্গল সমিতি, কুলটির বেলরুই মঠ, বার্নপুরের নবীন সঙ্ঘ, গৌরাঙ্গ সরণীর রামকৃষ্ণ পূর্ণানন্দ সঙ্ঘ, দুর্গাপুরের অঙ্গদপুরের নবকিশোর সঙ্ঘের পুজোগুলিও নজরকাড়া।