ডিএম অফিসে মার, অবরোধ

বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ মহকুমার প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা নেওয়া হচ্ছে জেলা আইসিডিএস দফতরের পাশের তিনটে ঘরে। শুক্রবার দুপুরে সেখানে তৃণমূল নেতারা জেলা পরিষদের জন্য মনোনয়ন জমা দিচ্ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব  সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১০
Share:

বাধা: বিজেপি কর্মীর জামায় টান তৃণমূলের। —নিজস্ব চিত্র।

বিরোধীদের উপরে হামলার আঁচ এসে পড়ল জেলাশাসকের অফিস চত্বরেও!

Advertisement

বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ মহকুমার প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা নেওয়া হচ্ছে জেলা আইসিডিএস দফতরের পাশের তিনটে ঘরে। শুক্রবার দুপুরে সেখানে তৃণমূল নেতারা জেলা পরিষদের জন্য মনোনয়ন জমা দিচ্ছিলেন। তারই মধ্যে বিজেপি-র জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি মিলিয়ে ১০ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে ওই ঘরে ঢোকেন। অভিযোগ, ভিতরে থাকা তিরিশ-চল্লিশ জনের একটি দল মনোনয়নগুলি কেড়ে বিজেপি প্রার্থীদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। কেউ প্রতিবাদ করলে টানতে টানতে বের করে দেওয়া হয়েছে।

এর প্রতিবাদে বিজেপি-র জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর নেতৃত্বে পুলিশ সুপারের বাদামতলা দফতরের দিকে অবস্থান শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ শহরের ভিতরে ওই রাস্তা অবরোধও হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) প্রিয়ব্রত সরকারের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। সন্দীপবাবুর অভিযোগ, “মনোনয়নের সময় তৃণমূলের ৩০-৪০জন ভিতরে থেকে আমাদের মারধর করছে। আর প্রশাসন চোখ বুজে বসে রয়েছে। পুলিশ অবশ্য লুকোচুরি খেলছিল!” যা শুনে তৃণমূলের জেলা অন্যতম সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, “আমি নিজেই তো মনোনয়ন জমা দিলাম। বিজেপি-র কাউকে তো এসডিও অফিসে দেখলাম না!” জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

গোলমাল হয়েছে গলসি ২ ব্লকেও। মনোনয়ন জমা দিতে এ দিন সিপিএম প্রার্থীরা দলবদ্ধভাবে ব্লক দফতর থেকে কিছুটা দূরে জড়ো হয়েছিলেন। সিপিএমের অভিযোগ, বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বাবলা গ্রামের দিক থেকে ব্লক দফতরে পৌঁছনোর রাস্তা ধরে মিছিল করে প্রার্থীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তৃণমূল পথ আটকে দেয়। দু’পক্ষের মধ্যে প্রথমে বচসা, পরে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা তৃণমূল কর্মীরা ছুটে এসে সিপিএমের উপরে হামলা চালান বলে অভিযোগ।

গলসি থেকে পিঠটান দিলেও আউশগ্রামে প্রতিরোধ করেছে সিপিএম। সিপিএমের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে একটি গাড়ি এবং ২৫-৩০টি মোটরবাইকে তৃণমূলের বাহিনী আউশগ্রামে চক্কর দিচ্ছিল। আউশগ্রাম ১ ব্লকের বননবগ্রামের কাছে রামচন্দ্রপুরে ওই বাহিনী ঢোকে। তারা গভীর রাতে গ্রামের সিপিএম নেতা স্বপন কোনারের বাড়ি হামলা চালাতে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, খবর পেয়ে আশপাশ থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের কিছু মানুষজন ছুটে আসেন। অন্ধকারে গাছের আড়াল থেকে তির ছুড়তে থাকেন। বাইক ফেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে সিপিএমের দাবি।

পুলিশ ওই এলাকা থেকে ১০-১২টি মোটরবাইক উদ্ধার করেছে। সিপিএমের নেতা আলমগীর মণ্ডলের দাবি, “শুক্রবার আউশগ্রাম ১ ও শনিবার আউশগ্রাম ২ ব্লকে মনোনয়ন জমা দেব বলে ঠিক করেছিলাম। প্রতিরোধও করতাম। কিন্তু, অহেতুক অশান্তি এড়াতে মহকুমাশাসকের কাছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।” আউশগ্রামেই বিজেপি-র হাতে মার খেয়ে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা আশিস প্রামাণিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আউশগ্রামের আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে। পুলিশকে বলা হয়েছে।” পুলিশ এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতারও করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন