একটি ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে ইউরোপ ভ্রমণে গিয়েছিলেন রাজ্যের ৪৮ জন পর্যটক। কিন্তু বেড়াতে গিয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে এসেছেন তাঁরা। সেই দলে ছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ সাইদুল হক। তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানান তিনি।
কলকাতার ওই ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে ইউরোপ ভ্রমণে যাওয়া দলটিতে ছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, রেল-সহ নানা সংস্থার পদস্থ কর্তা ও তাঁদের পরিজনেরা। ২৪ মে দলটি কলকাতা থেকে রওনা দেয়। ছ’টি দেশ ঘোরার পরে ২ জুন তাঁরা পৌঁছন ভেনিসে। পর দিন সকালে একটি বাসে তাঁরা রওনা দেন ফ্লোরেন্সের উদ্দেশে। মাঝ পথে ঘটে বিপত্তি।
সাইদুল হক জানান, ঘণ্টা দেড়েক যাওয়ার পরে গাড়ির চালক যাত্রীদের আপতকালীন দরজা দিয়ে সবাইকে বের করে দেন। তাঁরা বেরিয়ে দেখেন, বাসটিতে আগুন ধরে গিয়েছে। ভিতরে তখন তাঁদের যাবতীয় জিনিসপত্র রয়েছে। মিনিট পনেরোর মধ্যে পুলিশ আসে। কিন্তু, দমকল আসতে দেরি করে। চোখের সামনে সব পুড়ে যায়। প্রাক্তন সাংসদের কথায়, ‘‘প্রায় এক ঘণ্টা পরে দমকল আসে। তখন আর কিছু করার নেই। আমাদের একটি গাড়িতে তুলে ফ্লোরেন্স এয়ারপোর্ট থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’ সেখানে তাঁরা লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরে তাঁরা রোমে ভারতীয় দুতাবাসে যান। সঙ্গে ছিলেন পুড়ে যাওয়া বাসের চালকও। সাইদুল হক বলেন, ‘‘সব কিছু পুড়ে গিয়েছে। বিদেশে এমন পরিস্থিতিতে খুব অসহায় মনে হচ্ছিল। তাই ভারতীয় দূতাবাসে গিয়েছিলাম। কিন্তু সত্যি কথা বলতে, সেখানেও কোনও সাড়া পাইনি।’’
প্রাক্তন সাংসদ জানান, দেশে ফিরেই তিনি বিদেশমন্ত্রীর দফতরে ফ্যাক্স বার্তা মারফত বিষয়টি জানান। সম্প্রতি ব্যক্তিগত ভাবেও বিদেশমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছেন বলে জানান তিনি। যে ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা ইউরোপে গিয়েছিলেন, সেই সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার সুজয় মিত্র জানান, ইউরোপের একটি সংস্থার সঙ্গে মিলে ইউরোপ ভ্রমণের ব্যবস্থা করেন তাঁরা। সেই সংস্থার মাধ্যমে যাত্রীদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার কোনও সম্ভাবনা রয়েছে কি না, সে উদ্যোগ তাঁরা শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ফ্লোরেন্সে পুলিশের কাছে যে অভিযোগ করা হয়েছিল তার প্রতিলিপি এবং পুড়ে যাওয়া বাসটি যে সংস্থার তার যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানাও পাঠিয়ে দেব প্রত্যেক যাত্রীকে। তাঁরা ব্যক্তিগত ভাবেও ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে পারবেন।’’