মোবারক মঞ্জিলের ‘বেনসন টাওয়ার ক্লক’। নিজস্ব চিত্র
ঘড়ির ভীষণ শখ ছিল রাজা বিজয়চাঁদের। তিনি চাইতেন রাজবাড়ির কর্মচারীরা যেন সময়ের গুরুত্ব বুঝে কাজ করেন। শোনা যায়, এই কারণেই বর্ধমান শহরের বড়বাজার এলাকায় মোবারক মঞ্জিলের উপর বড় ঘড়ি বসিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে থমকে রয়েছে ‘বেনসন টাওয়ার ক্লক’ নামে এই ঘড়ি।
ইতিহাস বলে, আনুমানিক ১৮৯৮ সাল নাগাদ এই ঘড়ি তৈরি হয়। মোবারক মঞ্জিলের মাথায় চারকোনা স্তম্ভের চার দিকেই রয়েছে চারটি ঘড়ি। একসময় শহরের যে কোনও প্রান্ত থেকেই দেখা যেত এই ঘড়ি। এখনও বেশির ভাগ জায়গা থেকেই দেখা যায়। মাস ছয়েক আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্যোগো রঙিন এলইডি আলো লাগিয়ে সাজিয়েও দেন এই ঘড়ি। তারপরেও প্রশাসন তা সারানোর কোনও উদ্যোগ না করায় ক্ষুব্ধ শহরবাসী।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর রয়েছে এই ভবনে। তার পরেও দেড় বছর খারাপ পড়ে রয়েছে ঘড়িটি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯২০ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত ঘড়িটি খারাপ ছিল। সারানোর পরে ১৯৯০ সালেও এক বার তা খারাপ হয়। এরপর অনেকবারই থমকেছে ঘড়ির কাঁটা। সম্প্রতি এক বার তা সারিয়েও দেয় বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা। কিন্তু গত দেড় বছরে বন্ধ ঘড়ির আর মেরামতি হয়নি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালার কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানা বলেন, ‘‘বর্ধমানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই ঘড়ি দেখা যায়। যখন চোখ যায় ঘড়ির দিকে, তখন দেখি ঘড়ি বন্ধ। এটা শহরের ঐতিহ্যের পক্ষে খুব খারাপ।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ী শ্বাশত মাথুর, এলাকার বাসিন্দা সুকুমার দে-রাও জানান, প্রশাসনের উচিত দ্রুত ঐতিহ্যবাহী ঘড়ি সংস্কারে উদ্যোগ করা।
বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক তথা বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, আবেদন করা হলে বিডিএ-র তরফে ঘড়ি সারানোর পদক্ষেপ করা হবে।