বার্তা: কালনায় মিছিলে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
বারবার নানা বিষয় নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে গুজব। যার জেরে কখনও হেনস্থা করা হচ্ছে, কখনও আবার মারধরে মৃত্যু হচ্ছে নিরীহের। এমন গুজব রুখতে বুধবার কালনা মহকুমা প্রশাসনের তরফে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হল বৈদ্যপুর এলাকায়।
এই ধরনের গুজব ছড়ানোর ঘটনা শুরু হয় কালনা শহরের বারুইপাড়া এলাকায়। প্রায় দশ মাস আগে এক সকালে নদিয়ার শান্তিপুর থেকে গাছে কীটনাশক স্প্রে করতে আসা একদল লোককে বারুইপাড়ায় ছেলেধরা সন্দেহে বেধড়ক মারধর করা হয়। লাঠি, রডের আঘাতে মৃত্যু হয় দুজনের। তিন জন গুরুতর জখম হন। এই ঘটনায় এক নাবালক-সহ কুড়ি জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেই মামলার বিচার চলছে কালনা আদালতে। এই ঘটনার কিছু দিন পরেই আবার ছেলেধরা গুজবে ধাত্রীগ্রামে একটি বেসরকারি সংস্থার কয়েকজন কর্মীকে আটকে রাখেন স্থানীয় কিছু বাসিন্দা। ওই কর্মীদের একটি স্কুল থেকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। জখম হয় পুলিশ।
ধাত্রীগ্রামের পরে সমুদ্রগড়, নিমতলা বাজার, পাটুলি-সহ নানা এলাকায় একই রকম ভাবে গুজব ছ়়ড়ায়। মাস আটেক আগে মন্তেশরের রায়গ্রামে একটি মাদ্রাসার জন্য এক মহিলা অর্থ সংগ্রহ করতে গেলে তাঁকে একটি বাড়িতে আটকে রেখে হেনস্থা করা হয়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। এর কিছু দিন পরেই কালনা ২ ব্লকে যাত্রা উৎসব চলাকালীন গোটা ব্লক জুড়ে গুজব ছড়ায়, অনেকের বাড়ি থেকে শিশু চুরি যাচ্ছে।
গুজব রুখতে এই সমস্ত জায়গায় প্রশাসনের তরফে মাইকে প্রচার চালানো হয়েছে। বিলি করা হয় সচেতনেতামূলক বিভিন্ন লিফলেট। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও সম্প্রতি বৈদ্যপুরে শ্মশানে শিশুবলির গুজবে এক আদিবাসী সাধক ও তাঁর আত্মীয়দের হেনস্থা করা হয়। উদ্ধারে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
মহকুমা প্রশাসনের তরফে এ দিন বিকেলে বৈদ্যপুর রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি মিছিল করা হয়। কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটলে প্রশাসনের নজরে আনার আর্জি জানানো হয়। গুজব ছড়ানো ও গুজবে কান দেওয়া অপরাধ, সে কথাও বোঝানো হয় এলাকাবাসীকে। ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মালবিকা খাটুয়া, কালনা ২ বিডিও মিলন দেবগড়িয়া। বিডিও বলেন, ‘‘নানা উদ্দেশ্যে গুজব ছড়ানো হয়েছে। তবে প্রশাসন সজাগ আছে।’’ জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্তেরও অভিযোগ তুলেছেন।