পেট্রল মিলছে হেলমেট ছাড়াই

চলতি বছরের ২৩ জুলাই জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি প্রতিটি পেট্রল পাম্পে নির্দেশিকাটি ঝুলিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৭
Share:

এমনই দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে আসানসোলের নানা পেট্রল পাম্পে। নিজস্ব চিত্র

বছর চারেক আগে এক বার। তার পরে ফের চলতি বছরের ২৩ জুলাই। প্রশাসনের একই নির্দেশ, হেলমেট ছাড়া পেট্রল পাম্প থেকে জ্বালানি মিলবে না। কিন্তু আসানসোলের বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতা, প্রশাসনের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অধিকাংশ পাম্প থেকেই ‘নিশ্চিন্তে’ জ্বালানি সংগ্রহ করছেন স্কুটার, মোটরবাইক চালকেরা।

Advertisement

চলতি বছরের ২৩ জুলাই জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি প্রতিটি পেট্রল পাম্পে নির্দেশিকাটি ঝুলিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি তেল সংস্থাগুলির আঞ্চলিক আধিকারিকদের কাছেও নির্দেশিকাটি পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান জেলাশাসক।

তবে এই সব নির্দেশ অমান্য হচ্ছে বলেই শহরবাসীর একাংশ জানান। শুক্রবার বরাকর, আসানসোল, বার্নপুরের বিভিন্ন পাম্প ঘুরে দেখা গেল, সাঁ সাঁ করে ঢুকছে মোটরবাইক। চালকদের অনেকের মাথাতেই নেই হেলমেট। কিন্তু তেল নিতে তেমন কোনও অসুবিধা নেই কোথাও। দু’-একটি জায়গায় পাম্পের কর্মীরা হেলমেট না দেখে ‘মৃদু আপত্তি’ জানান। তবে সে সব আপত্তি বাইক চালকদের মেজাজের সামনে তেমন ধোপে টেকেনি।

Advertisement

কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ কেন মানা হচ্ছে না? নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েও ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রেল পাম্প ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক রাজু আগরওয়াল বলেন, ‘‘হেলমেট ছাড়া তেল দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু কিছু কিছু চালক এমন অভব্য আচরণ করছেন যে, অশান্তির আশঙ্কায় পাম্পের কর্মীরা আর আপত্তি জানাচ্ছেন না।’’ এমন ‘অভব্য আচরণের’ সম্মুখীন হওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে কুলটির একটি পাম্পের মালিক সঞ্জয় আচার্যের। তিনি বলেন, ‘‘জেলাশাসকের নির্দেশের কথা বলায় মারমুখী হয়ে তেড়ে আসেন এক চালক। তাঁকে বাধ্য হয়ে তেল দিতে হয়েছে।’’

এই পরিস্থিতিতে পাম্প মালিকদের বড় অংশেরই আর্জি। প্রতিটি পাম্পে কম করে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হোক। তা হলে সমস্যা মিটবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (পরিবহণ) প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘পাম্প মালিক ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত বৈঠক করে আমরা পদক্ষেপ করব। কোনও ভাবেই জেলাশাসকের নির্দেশ অমান্য করা যাবে না।’’ পাশাপাশি, নির্দেশ কারা মানছেন না, সে বিষয়েও খোঁজখবর করা হবে বলে জানান প্রশাসনের কর্তারা।

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার বিপণন সংস্থার জেলা আধিকারিক সৈকত মণ্ডল জানান, পাম্প মালিকদের লিখিত ভাবে জেলাশাসকের নির্দেশ মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ প্রতিটি পাম্পে ঝোলানোও হয়েছে। তিনি জানান, জেলার কয়েকটি বড় পেট্রল পাম্পে তাঁদের সংস্থার তরফে হেলমেটের দোকান দেওয়া হবে।

জেলাশাসক জানান, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতেই প্রশাসনের এই নির্দেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন