Agnimitra Paul

Agnimitra Paul: হঠাৎ ফাটল, বিক্ষোভের মুখে অগ্নিমিত্রা

পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে কালীপাহাড়ির তিন নম্বর ঘুষিক কোলিয়ারি লাগোয়া, শালগুড়িয়া গ্রামে প্রায় ৩০টি পরিবারের বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৫১
Share:

বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এলাকায় পৌঁছতেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বাসিন্দারা।ভেঙে গিয়েছে পাঁচিল। নিজস্ব চিত্র

হঠাৎ বাড়ি, মেঝেতে ফাটলের জেরে আতঙ্ক ছড়াল আসানসোলের কালীপাহাড়িতে। রবিবার রাতের এই ঘটনার পরে, বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র সরে যান। খবর পেয়ে সোমবার এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়েন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। স্থানীয়দের অভিযোগ, খবর দেওয়ার অনেক পরে, তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছন। অগ্নিমিত্রার অবশ্য দাবি, “বিষয়টি শুনে আমি রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে ঘটনাস্থল থেকে বলা হয়, সকালে আসতে।”

Advertisement

পুরসভার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে কালীপাহাড়ির তিন নম্বর ঘুষিক কোলিয়ারি লাগোয়া, শালগুড়িয়া গ্রামে প্রায় ৩০টি পরিবারের বাস। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তাঁরা মাটি কাঁপছে বলে অনুভব করেন। বাইরে বেরিয়ে দেখেন, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মাটিতে ফাটল ধরেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই একাধিক বাড়ির দেওয়াল ও মেঝে চড়চড় শব্দে ফাটতে শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই স্থানীয় ক্লাব ও ১০ নম্বর কালীপাহাড়ি এলাকায় পুরসভার বানানো বিপিএল তালিকাভুক্তদের তালাবন্ধ ঘর ‘দখল’ করেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, যে এলাকার ঘটনা, তা সংস্থার নিজস্ব এলাকা। ঘটনাস্থলের খুব কাছে থাকা শ্রীপুর এরিয়ার তিন নম্বর ঘুষিক কোলিয়ারি প্রায় ১১ বছর আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এরিয়ার জিএম মনোজকুমার যোশী জানান, এলাকাটি ‘রানিগঞ্জ ধসকবলিত’ অঞ্চলের আওতায় রয়েছে। তাঁর দাবি, “এই এলাকার বাসিন্দারা সংস্থার জমি দখল করে আছেন। বহু বার সংস্থার তরফে তাঁদের উঠে যাওয়ার নির্দেশ হয়েছে।” কিন্তু তাঁরা উঠে যাচ্ছেন না বলে দাবি সংস্থা কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

এলাকায় সোমবার সকালে গিয়ে দেখা গেল, শালগুড়িয়া গ্রাম জুড়ে মাকড়সার জালের মতো ফাটল ধরেছে। প্রায় ১২টি বাড়ির দেওয়াল ও মেঝে বিপজ্জনক ভাবে ফেটে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সানু বাউড়ি জানান, রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। তার মধ্যেই পড়িমরি করে তাঁরা নিরাপদ জায়গায় সরে যান। মহম্মদ সামসের আলম বলেন, “রাতের খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় হঠাৎ ঘরবাড়ি কেঁপে উঠল। দেখলাম, ঘরের দেওয়াল ও মেঝে ফেটে গেল! দেরি না করে পরিবার নিয়ে ছুটে বেরিয়ে আসি।’’

সকালে বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এলাকায় পৌঁছতেই স্থানীয়দের একাংশ তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এক বিক্ষোভকারী ইন্দ্রজিৎ বাউড়ি বলেন, “সারা রাত আমরা খুব আতঙ্কে ছিলাম। অথচ, জেনেও রাতে আসেননি বিধায়ক।” অগ্নিমিত্রার দাবি, “যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁরা বিক্ষোভ দেখাননি। আমি দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছি বলেই তৃণমূলের লোকেরা রাজনীতি করার জন্য বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।” বিক্ষোভ ও অগ্নিমিত্রার দাবি প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক অভিজিৎ ঘটক বলেন, “বাসিন্দারা বুঝে গিয়েছেন কারা মানুষের সঙ্গে থাকেন, আর কারা শুধু কাগুজে নেতা।
সে অভিজ্ঞতা থেকেই এ দিনের বিক্ষোভ হয়েছে।”

এ দিন বিকেল পর্যন্ত শালগুড়িয়া গ্রামে ১২টি বাড়িতে ফাটল ধরা পড়েছে। অথচ, বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য পুরসভার তরফে বানানো প্রায় ৮০টি বাড়ি তালা ভেঙে ‘দখল’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ‘দখলকারী’রা নিজেদের ধসকবলিত বলে দাবি করেছেন।

‘দখলের’ বিষয়টি শোনার পরে, এলাকায় যান পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। অমরনাথ বলেন, “ধসের জেরে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁরাই পুরসভার তরফে বানানো বিপিএল তালিকাভুক্তদের ওই বাড়িতে অস্থায়ী ভাবে থাকার সুযোগ পাবেন। ক্ষতিগ্রস্ত হননি তেমন কেউ ঘর দখল করলে দ্রুত তা ছেড়ে দিতে হবে। না হলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন