ঝুঁকি সত্ত্বেও ‘রেফার’ নয়, প্রসব ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মঙ্গলকোটের কামালপুরের বছর তিরিশের আলেয়া বিবি প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে আলেয়া বিবি ও সদ্যোজাত সন্তান। নিজস্ব চিত্র

প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন প্রসূতি। কিন্তু, চিকিৎসকেরা দেখেন, গর্ভস্থ সন্তানের অবস্থান আশঙ্কাজনক। এই রকম পরিস্থিতিতে সাধারণ উচ্চতর হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দেওয়াই দস্তুর। কিন্তু সোমবার মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তা করেনি। চিকিৎসক-নার্সেরা ঝুঁকি নিয়ে সেখানেই সফল ভাবে প্রসব করান।

Advertisement

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মঙ্গলকোটের কামালপুরের বছর তিরিশের আলেয়া বিবি প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। দেখা যায়, গর্ভস্থ সন্তানের যা অবস্থান, তাতে প্রসব করানোর মতো পরিকাঠামো ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই। বিষয়টি সঙ্গে-সঙ্গে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের নজরে আনা হয়। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) প্রণয় ঘোষ বলেন, “গর্ভে সাধারণত সন্তানের মাথা নীচের দিকে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে মাথা ছিল উপরের দিকে। একে ডাক্তারি পরিভাষায় ‘ফ্লেক্সড ব্রিচ ডেলিভারি’ বলা হয়।’’

বিএমওএইচ জানান, এই সব ক্ষেত্রে সাধারণত রোগীকে জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয় এবং অস্ত্রোপচার করে প্রসব করানো হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে রোগী এমন সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন যে তাঁকে অন্যত্র পাঠানোর মতো সময়টুকুও ছিল না। সেক্ষেত্রে সদ্যোজাতের প্রাণ সংশয়ের সম্ভাবনা ছিল। প্রণয়বাবু বলেন, ‘‘তাই ঝুঁকি নিয়ে এখানেই প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নিই।” চিকিৎসকেরা জানান, এক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসব করানোর সময়ে সন্তানের মাথা ও কাঁধ আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবু বিএমওএইচ এবং দু’জন নার্স মিলে স্বাভাবিক প্রসবই করান। প্রায় ২৫ মিনিট সময় লাগে।

Advertisement

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, প্রসবের পরেও সঙ্কট কাটেনি। জন্মের পরে সদ্যোজাত বেশ কিছুক্ষণ কাঁদেনি। অক্সিজেন-সহ নানা পদ্ধতি ব্যবহারের পরে সে কেঁদে ওঠে। বিএমওএইচ জানান, মা ও শিশু এখন সুস্থ আছে। প্রসূতির স্বামী আইনাদ্দি মোল্লা বলেন, “প্রসব যন্ত্রণা ওঠার পরে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে এই অবস্থার কথা শুনে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ডাক্তারবাবুরা সুস্থ ভাবে প্রসব করিয়েছেন। সে জন্য তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।”

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোর মধ্যে চিকিৎসকেরা যে কাজ করেছেন, তা প্রশংসনীয় ও দৃষ্টান্তমূলক।” মা ও শিশুকে মঙ্গলবার ছেড়ে দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন