Burdwan Medical College

এক নমিতার রক্তের প্রয়োজন, দেওয়া হল আর এক নমিতাকে! ঘটনাস্থল আবার সেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ

রক্তাল্পতায় ভোগা নমিতা মাঝির জন্য আনা রক্ত দিয়ে দেওয়া হয় সাপের কামড়ে জখম নমিতা বাগদিকে। পরে ভুল বুঝতে পারেন নার্সেরা। অবাক করা কাণ্ড সেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:১৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

রক্ত দরকার একজনের। কিন্তু সেই রোগিণীর জন্য নিয়ে যাওয়া রক্ত দিয়ে দেওয়া হল সমনামী আর এক রোগিণীকে। ঘটনাস্থল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। তবে ভুলেও ভুল স্বীকার করেননি কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেলে দেখবেন।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বলগোনার বাসিন্দা নমিতা মাঝি রক্তাল্পতায় ভুগছেন। শনিবার সকালে ৫৩ বছরের রোগিণীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়েছিলেন পরিজনেরা। রোগিণীকে পরীক্ষা করে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁর আত্মীয়ের হাতে দুটো কাগজ ধরিয়ে দিয়ে জানিয়েছিলেন, ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনতে হবে। নমিতার ছেলে সঞ্জিত মাঝি বলেন, ‘‘কথা মতো রক্ত আনলাম। কিন্তু ওই রক্ত মায়ের বদলে নমিতা বাগদি নামে অন্য এক জনকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বৌদিকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি, মাকে রক্ত দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে অন্য জনকে সেই রক্ত দেওয়া হয়েছে।’’ অন্য দিকে, অন্য নমিতার শরীরে রক্ত যেতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন টনক নড়ে নার্সদের। ভুল শুধরে নেন। কিন্তু সকাল পর্যন্ত হাসপাতালের তরফে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি কেউ।

বাগদি পরিবার সূত্রে খবর, ১৬ দিন আগে সাপের কামড় খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ওই নমিতাকে। শনিবার খানিক সুস্থই ছিলেন। কিন্তু রক্তবদল কাণ্ডের পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। নমিতার আত্মীয়া বাতাসি বাগদি বলেন, ‘‘গতকাল (শনিবার) দুই নমিতার আত্মীয়কে ডাকা হয়েছিল ওয়ার্ডে। তখনই ওই বিভ্রান্তি ঘটে।’’ তিনি জানান, রক্ত কিছুটা দেওয়ার পর থেকেই সাপে কাটা রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। তাঁকে আইসিইউ-তে পাঠানো হয়। তবে এখন তিনি খানিক ভাল আছেন। অভিযোগ করেছিলেন? বাতাসির দাবি, ‘‘এই চরম বিভ্রান্তি ধরা পড়ার পর ডাক্তারবাবু উল্টে পেসেন্টপার্টিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কেন বলোনি?’’’

Advertisement

এ নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সুপার তাপস ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘এখনও (রবিবার দুপুর পর্যন্ত) তো কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।’’ ওদিকে বাগদিবাড়ির নমিতার বাবা দুকড়ি বাগদি বলেন, ‘‘আমরা তো রক্তই আনিনি। আনার কথাও নয়। তবু কী ভাবে অন্য রোগীর রক্ত আমাদের রোগীকে দিয়ে দেওয়া হল, সেটা তো ওদেরই (হাসপাতাল) বলতে হবে। আমরা খুবই বিভ্রান্ত।’’ বস্তুত, গত কয়েক দিন ধরে নানা কারণে খবরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। হাসপাতাল থেকে শিশুচুরি থেকে আলো নিবিয়ে রোগীর কন্যার শ্লীলতাহানি করে গ্রেফতার, বার বার বিতর্কে জড়িয়েছে জেলার বড় হাসপাতাল। সেই ধারা চলছেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement