কর্মী নিয়োগ নিয়ে অশান্তি, বোমা হাসপাতালের সামনে

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৯
Share:

চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর গোলমাল বাধে দুর্গাপুরের বিধাননগরে। প্রতীকী ছবি।

বোমাবাজির ঘটনা ঘটল দুর্গাপুরের বিধাননগরে। শুক্রবার সকালের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর গোলমাল বাধে। পরে নিউটাউনশিপ থানার পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থাকে। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে নিয়োগ করছে সংস্থাটি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূল নেতা স্বাধীন ঘোষ হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের বিষয়টি দেখতেন। কিন্তু এলাকায় স্বাধীনবাবুর বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূল নেতা তথা হাসপাতালেরই কর্মী বিজয় বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন স্বাধীনবাবু অভিযোগ করেন, বহিরাগতদের নিয়োগ করা হচ্ছে। অথচ, স্থানীয়েরা কাজ পাচ্ছেন না। বিজয়বাবুর অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ করা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বাঁকুড়ার পখন্নার এক জনের নিয়োগ নিয়ে ঝামেলা বাধে। স্বাধীনবাবু ও বিজয়বাবুর অনুগামীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করতে শুরু করেন। এক সময় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। স্বাধীনবাবুর অনুগামীরা তাড়া করে অন্যপক্ষকে। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় স্বাধীনবাবুকেও, দাবি এলাকাবাসীর একাংশের।

Advertisement

হাসপাতালের সামান্য দূরে সেক্টর ২ সি মাঠে বোমা ছোড়ার অভিযোগ ওঠে স্বাধীনবাবু ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। একটি বোমা ফাটে মাঠের পাশে থাকা শিশুদের একটি স্কুলের গেটের পাশের দেওয়ালে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, অভিভাবক-মিটিং থাকায় এ দিন আগে ছুটি দেওয়া হয়। তাই বিপদ এড়ানো গিয়েছে। আর একটি বোমা ফাটে মাঠে। চারিদিকে বসতি এলাকা। বোমার শব্দে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।

স্বাধীনবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘স্থানীয়দের নিয়োগের দাবি জানিয়েছিলাম। কোনও গোলমাল, বোমা ছোড়ার ঘটনায় আমি যুক্ত নই।’’ বিজয়বাবুর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘প্রকৃত কাজের দরকার যাঁদের, তাঁরা কাজ পাচ্ছেন না। টাকা নিয়ে কাজে নিয়োগ করছেন স্বাধীনবাবু।’’

খবর পেয়ে পুলিশের বড় বাহিনী পৌঁছে যায় এলাকায়। যান আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) আরিস বিলাল। র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স দু’পক্ষকেই হঠিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছে যান তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। হাসপাতালে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা কোনও ভাবেই মানা হবে না। দলের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে। দলের কেউ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

হাসপাতাল সুপার পার্থ পাল অবশ্য এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘হাসপাতালের বাইরে একটা ঘটনা ঘটেছে। তা নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। হাসপাতালের পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত হয়নি। একটি বেসরকারি সংস্থাকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া আছে। কাকে নিয়োগ করবে আর কাকে করবে না সেটা তাদের বিষয়। সে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করণীয় কিছু নেই।’’

পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করেনি কোনও পক্ষই। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন