বই কেনাবেচা কার্ডেই। ছবি:শৈলেন সরকার
আয়োজক থেকে প্রকাশক, আশঙ্কায় ছিলেনে সকলেই। কিন্তু কয়েকটা দিন গড়াতেই আশ্বস্ত হয়েছেন তাঁরা, আশঙ্কাটা অমূলক ছিল। নোট বাতিলের তেমন প্রভাব পড়েনি আসানসোল বইমেলার কেনাবেচায়। প্রকাশনা সংস্থাগুলির দাবি, বই বিক্রি হচ্ছে যথেষ্টই। নগদহীন লেনদেনের ব্যবস্থা রাখার জন্যই তা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে তারা।
এটিএম থেকে টাকা তোলার ঊর্ধ্বসীমা খানিকটা বেড়েছে। কিন্তু বাজারে নগদের জোগান পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ফলে, হাত খুলে কেনাকাটা করার প্রশ্নে এখনও কিছুটা সাবধানী মানুষজন। এই পরিস্থিতিতে ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় আসানসোল বইমেলা। নগদের অভাবে বিক্রি মার যেতে পারে, এই চিন্তা থেকে বড় প্রকাশনা সংস্থাগুলি স্টলে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে কেনাবেচার জন্য স্যোয়াইপ যন্ত্র রেখেছিল। স্টলের সামনে সে কথা বড়-বড় হরফে লিখেও রেখেছে অনেকে।
এই ব্যবস্থার ফলে এ বার বই বিক্রি আগের বারের মতোই হচ্ছে বলে জানালেন একটি বড় প্রকাশনা সংস্থার কর্মী রতন মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘বেশির ভাগ ক্রেতাই কার্ডে দাম মেটাচ্ছেন। আমরাও সুবিধা পাচ্ছি।’’ আর এক প্রকাশনা সংস্থার কর্মী অসিত মাইতি জানান, বই কেনার আগে অনেকেই জেনে নিচ্ছেন, কার্ডে দাম মেটানো যাবে কি না। ব্যবস্থা আছে শুনে নিশ্চিন্ত হচ্ছেন। অসিতবাবুর মতে, ‘‘কার্ডে লেনদেন না করা হলে এ বার বিক্রি মার যেত।’’
মেলার মাঠে অনেক ছোটখাট প্রকাশনা সংস্থাকে পেটিএমের মাধ্যমে দাম নিতেও দেখা গিয়েছে। অনেকে মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা (মানি ট্রান্সফার) রেখেছেন। একটি ছোট পত্রিকার প্রকাশক রবিন প্রামাণিকের কথায়, ‘‘পরিচিত ক্রেতাদের কাছ থেকে বইয়ের দাম মানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে নিচ্ছি।’’ আয়োজকদের অন্যতম মলয় সরকার জানান, এ বার নগদহীন কেনাবেচায় চাহিদা থাকবে বুঝে বিক্রেতাদের সব রকম সাহায্য করা হয়েছে।
কার্ড বা মোবাইল অ্যাপে বেচাকেনার সুবিধার মতোই এ বার বইমেলার মাঠে রয়েছে আরও নানা আকর্ষণ। আলোকচিত্রের প্রদর্শনী দেখতে নানা স্টলে উপচে পড়েছে ভিড়। গ্রামোফোন রেকর্ডের স্টলে বহু পুরনো শিল্পীদের গান, রবীন্দ্রনাথের কণ্ঠে বন্দেমাতরম বা নেতাজির ভাষণ মেলায় অন্য মাত্রা যোগ করেছে।