নিহত বালিকার বাড়িতে নেতারা

পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে পেশায় ঠেলা চালক ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী এক লেপ-তোশকের ব্যবসায়ীর শত্রুতার কথা জানা যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লাউদোহা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

‘বাদানুবাদ’ বিজেপিতে। নিজস্ব চিত্র

বছর আটেকের বালিকার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পরিবারের পাশে দাঁড়াল বিজেপি এবং তৃণমূল, দু’পক্ষই। ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার মামাকুঠি গ্রামে দু’দলের নেতারাই ওই বালিকার পরিজনদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বুধবার বিজেপির জেলা নেতৃত্ব গ্রামে গেলে দলের স্থানীয় কর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্বে খানিক উত্তেজনা তৈরি হয়। নেতারা তা সামাল দেন। এই ঘটনায় ধৃত চার জনকে এ দিনই দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। তাদের ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর থেকে মেয়েটির খোঁজ মিলছিল না। তার বাবা ফরিদপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পুলিশ জানায়, তদন্তে নেমে পেশায় ঠেলা চালক ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী এক লেপ-তোশকের ব্যবসায়ীর শত্রুতার কথা জানা যায়। মঙ্গলবার ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির নির্মীয়মাণ শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে বালির ভিতর থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষোভে অভিযুক্তের লেপ-তোশকের দোকানে ভাঙচুর চালিয়ে জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে আগুন ধরিয়ে দেন। মামাকুঠি থেকে গোগলা যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করা হয়। পুলিশ ওই ব্যবসায়ী ও তার সঙ্গী তিন জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জেরা করে বিশদে ঘটনা জানার চেষ্টা হবে বলে জানায় পুলিশ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রামে গিয়ে পরিবারটির সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বুধবার সন্ধ্যাতেও গ্রামে যান তিনি। এ দিন সকালে দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্ণণ ঘোড়ুইয়ের নেতৃত্বে বিজেপির একটি দল বালিকার পরিবারটিকে সমবেদনা জানাতে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের তরফে ওই এলাকার কাজকর্ম কে দেখাশোনা করেন, জেলা সভাপতি তা জানতে চাইলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দলের কয়েকজন কর্মী লাউদোহা মণ্ডলের সভাপতি হিসেবে সারদা প্রসাদের নাম জানাতেই প্রবীণ বিজেপি নেতা নকুল মণ্ডল ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগ তোলেন সারদা প্রসাদের বিরুদ্ধে। জেলা সভাপতি পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে অবশ্য তিনি বলেন, ‘‘ছোট বিষয়। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করে নেওয়া হবে।’’

Advertisement

বিজেপির বিরুদ্ধে এই ঘটনায় রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। দলের ব্লক নেতা সুজিত মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমাদের বিধায়ক গিয়েছিলেন শুনে বিজেপি রাজনীতি করতে গিয়েছিল।’’ জিতেন্দ্রবাবুর বক্তব্য, ‘‘এখন পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে হবে। এটা রাজনীতি করার সময় নয়।’’ বিজেপি অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। মৃত বালিকার বাবা বলেন, ‘‘বিধায়ক এসেছিলেন। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। বিজেপির লোকজনও এসেছিলেন। আমরা বিধায়কের উপরে ভরসা রাখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন