জল বেড়ে দুই সেতুতে বিপদ

আউশগ্রাম থেকে কালীদহ যাওয়ার রাস্তায় বসন্তপুরের কাছে কাঁদরের উপর সেতুটি মেরামতের দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগেই সেতুটি ভেঙে পড়েছিল। স্থানীয় পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজে মেরামত করে। কিন্তু এই বৃষ্টিতে তা আবার ধসে পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা ও আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০১:৫০
Share:

কেলনই গ্রামের সেতু। নিজস্ব চিত্র।

জেলার নানা নদী এখনও বিপদসীমার নীচ দিয়েই বইছে। কিন্তু টানা বৃষ্টির জেরে সমস্যা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সেতুতে। ভেঙে যাওয়া সেতু একশো দিনের কাজে মেরামত করা হয়েছিল আউশগ্রামের বেরেন্ডায়। কিন্তু দু’দিনের বৃষ্টিতে ফের তা ভেঙে পড়েছে। ফলে, যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কালনা ২ ব্লকের কেলনই গ্রামের কাছে আবার নদীর জলে বাইপাস রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় বিপজ্জনক সেতু ধরে চলছে যাতায়াত। যে কোনও সময়ে সেটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

আউশগ্রাম থেকে কালীদহ যাওয়ার রাস্তায় বসন্তপুরের কাছে কাঁদরের উপর সেতুটি মেরামতের দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগেই সেতুটি ভেঙে পড়েছিল। স্থানীয় পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজে মেরামত করে। কিন্তু এই বৃষ্টিতে তা আবার ধসে পড়েছে। ফলে, ওই রাস্তা দিয়ে বাস-সহ সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই সেতু দিয়ে দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার সিলুট, বসন্তপুর, নবগ্রাম, সাহাপুর, মল্লিকপুর, বাবুরবাঁধ, কুরুম্বা-সহ বেশ কিছু গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। আউশগ্রাম থেকে কম সময়ে ভেদিয়া ও বোলপুরে যাওয়ার জন্য এই রাস্তা অনেকের ভরসা। বসন্তপুরের বাসিন্দা মোজারুল হক মণ্ডল, ইয়াসিন শেখদের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই সেতুটি মেরামতের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু প্রতি বারই জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। মাঝে-মধ্যেই সেতু ভেঙে যোগাযোগ ভেঙে পড়ছে।’’ শীঘ্রই সেতুটি মেরামত করার আশ্বাস দিয়েছেন আউশগ্রাম-১ বিডিও চিত্তজিৎ বসু।

কালনার কেলনই গ্রামে বিপজ্জনক সেতু এড়াতে তৈরি হয়েছিল বাইপাস রাস্তা। তবে সে রাস্তা বেহুলা নদীর জলে তলিয়ে যাওয়া ফের বিপজ্জনক সেতু দিয়েই চলছে চলাচল। কিন্তু ভগ্ন সেতুটি যে কোনও সময়ে ভেঙে পরতে পারে বলে আশঙ্কা বাসিন্দাদের। কেলনই, মালি কেলনই, খাগরাকুর, কুলটি, দফরপুর-সহ প্রায় ৩০টি গ্রামের বাসিন্দারা এই সেতু পেরিয়ে কালনা শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় যাতায়াত করেন। আবার অনেকে কালনা থেকে পাণ্ডুয়া যাওয়ার জন্যও এই রাস্তা ব্যবহার করেন।

Advertisement

বাসিন্দারা জানান, প্রায় ৩০ ফুট লম্বা সেতুটি দাঁড়িয়ে রয়েছে পাঁচটি কংক্রিটের স্তম্ভের উপরে। তবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সেগুলিতে বড় ফাটল ধরেছে। তিনটি স্তম্ভের হাল খারাপ। সেতুর উপরের অংশের গার্ডওয়ালও ভেঙে গিয়েছে। যানবাহন চলাচল করলে জোরে কম্পন শুরু হয়। জেলা পরিষদ বছরখানেক আগে সেতুর পাশ দিয়ে একটি বাইপাস রাস্তা তৈরি করে দেয়। তা নষ্ট হয়ে গেলে মাস সাতেক আগে ফের সেখানে রাস্তা তৈরি করা হয়। বাসিন্দাদের দাবি, বাইপাস রাস্তা করে প্রশাসনের কর্তারা দ্রুত পাকা সেতু তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই উদ্যোগ আর দেখা যায়নি।

রবিবার থেকে বেহুলার জল বাড়তে থাকায় বাইপাস তলিয়ে যায় জলে। যানবাহন না চললেও বহু মানুষ সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করছেন। ফসল বাজারে নিয়ে যেতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা স্বপন বিশ্বাস, শ্যামল দাসেরা বলেন, ‘‘নদীতে যে ভাবে জল বেড়ে চলেছে তাতে যে কোনও সময়ে হুড়মুড়িয়ে সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে। ফলে, বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।’’ কালনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আলমগীর সাত্তার বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দাদের ওই সেতু দিয়ে যাতায়াত না করা উচিত। বর্ষা মিটলে পাকা সেতু তৈরির কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন