কাল্লা সেতু। নিজস্ব চিত্র
অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে ইসিএলের কাল্লা হাসপাতালে যাচ্ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের কাবেরী সান্যাল। কিন্তু পথে গাড়ি থামাল পুলিশ, গাড়ি যাবে না। সামনে সেতুতে ফাটল। ঘটনাটা বৃহস্পতিবারের। বৃষ্টির জেরে নদীর জল আসানসোলের কাল্লা সেতুর উপরে দিয়ে বয়ে যাওয়ায় সে দিন বন্ধ ছিল যাতায়াত। বুধবার কিছু মোটরকবাইক, পথচারী যাতায়াত করলেও পরে পুলিশ তা-ও বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তার পরে ২৪ ঘণ্টা কাটলেও পরিস্থতির বদল হয়নি বলে অভিযোগ।
বুধবার জেলা প্রশাসন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেতু সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু তার পরে বৃহস্পতিবারও অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে বাসিন্দাদের। কাল্লা হরিপদ উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের সহ প্রধান শিক্ষক অতনু দত্ত বলেন, ‘‘বাস চলছে না। সময়ে স্কুলে পৌঁছতে নাকাল হচ্ছি। চড়া ভাড়া দিয়ে গাড়িতে করে প্রায় সাত কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরে স্কুলে আসতে হচ্ছে।’’ সেতুটি দিয়ে ইসিএলের কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতাল যান রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। তাঁদের এখন পাঁচ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরতে হচ্ছে। তা ছাড়া সেতুটি ব্যবহার করে বেশ কিছু মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা। বারাবনি, দোমহানি, কেলেজোড়া-সহ প্রায় তিরিশটি গ্রামের বহু বাসিন্দাও রোজ সেতুটি ব্যবহার করেন।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন ইসিএলের কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতালের সহ-স্বাস্থ্য আধিকারিক সোমনাথ মণ্ডলও। তাঁর কথায়, ‘‘চরম হয়রান হচ্ছেন রোগীরা। এত দিন জাতীয় সড়ক থেকে সহজেই আসা যেত। বেশি পথ ঘুরতে হওয়ায় আশঙ্কাজনক রোগীদের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।’’ দ্রুত সেতু সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, ‘‘পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা সেতু পরিদর্শন করে আমাকে রিপোর্ট দিয়েছেন। দিন কয়েক সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সংস্কার হবে সেতুর।’’ যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত সেতু পরিদর্শনে যাননি পূর্ত দফতরের কোনও কর্তা। ফাটলও মেরামত করা হয়নি। নির্মল চন্দ নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘যে কোনও সময়ে সেতুটি ভেঙে যেতে পারে। পায়ে হেঁটে বা মোটরবাইক নিয়ে সেতু পারপারও বিপজ্জনক।’’
তবে সেতু সংস্কারের পরে তা দিয়ে ন্যূনতম ১২ টন ওজন নিয়ে যাতায়াতে কোনও সমস্যা হবে না বলে দাবি জেলা প্রশাসনের।