Burdwan

মেলেনি কিছুই, রেল বাজেট নিয়ে হতাশ জেলার যাত্রীরা

মশাগ্রাম থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত আগে ‘ছোট লাইন’ ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:০০
Share:

—ফাইল চিত্র।

নানা দাবি ও প্রস্তাব ছিল। তার কোনওটি পূরণ হয় কি না, সে নিয়ে উৎকণ্ঠাও ছিল। কিন্তু রেল বাজেটের পরে দিনের শেষে হতাশই হতে হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের যাত্রীদের। বাঁকুড়া দামোদর রিভার রেললাইনকে (বিডিআর) মশাগ্রামে হাওড়া লাইনের সঙ্গে যোগ, বর্ধমান-কাটোয়া লাইনে আরও ট্রেন বা রেলের প্রাচীন ভবনগুলি সংরক্ষণে আশ্বাস— কিছুই মেলেনি বলে ক্ষোভ নানা যাত্রী সংগঠনের।

Advertisement

মশাগ্রাম থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত আগে ‘ছোট লাইন’ ছিল। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ব্রডগেজ পরিষেবা চালু হয়। এখন ওই লাইনের বিদ্যুদয়ন চলছে। বেশ কিছু স্টেশন উন্নত করার কাজও করছে রেল। কিন্তু ব্রডগেজ পরিষেবা শুরুর পর থেকেই নিত্যযাত্রীদের দাবি, হাওড়ার কর্ড লাইনের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ হোক। বাজেটের আগে নিত্যযাত্রীরা ফের এ নিয়ে সরব হন। পূর্ব রেল ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি এবং গণস্বাক্ষর অভিযান করে রেল মন্ত্রকে চিঠিও পাঠান।

নিত্যযাত্রীদের দাবি, কর্ড লাইনের সঙ্গে ওই লাইন যুক্ত করতে শ’দুয়েক মিটার লাইন পাততে হবে। সে জন্য পূর্ব রেলকে এগিয়ে আসতে হবে। পূর্ব রেলের কর্তাদের অবশ্য দাবি, কর্ড লাইন এমনিতেই ‘ওভারলোড’ হয়ে গিয়েছে। দ্রুত গতির ট্রেন বাড়ছে। এই অবস্থায় নতুন করে ওই লাইন দিয়ে ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। নিত্যযাত্রীরা পাল্টা যুক্তি দেন, হাওড়া-মশাগ্রাম পাঁচটি ট্রেন চলে। লাইন সংযুক্তিকরণ করে ওই সময়ে একটি বা দু’টি ট্রেন চালালে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। নিত্যযাত্রীদের দাবি, তার পরে রেলের তরফে আশ্বাস মেলায় তাঁরা আশায় ছিলেন। নিত্যযাত্রীদের সংগঠন ‘বাঁকুড়া দামোদর রিভার রেলওয়ে পরিবহণ ওয়েলফেয়ার সমিতির’ সম্পাদক তথা রায়নার সেহেরাবাজারের বাসিন্দা সুপ্রকাশ সামন্তের বক্তব্য, “সংযুক্তিকরণ না করলে এই লাইনে ট্রেন বাড়বে না। যাত্রী পরিষেবারও বিশেষ উন্নতি হবে না।’’ সংগঠনের একটি শাখার সম্পাদক সমীর রক্ষিতের কথায়, ‘‘রেল বাজেটের ‘পিঙ্ক বুক’ প্রকাশের পরে কর্তারা সংযুক্তিকরণ নিয়ে আলোচনায় বসবেন বলে শুনেছি।’’

Advertisement

বর্ধমান-হাওড়া মেন লাইনের নিত্যযাত্রী শ্রীকান্ত বসু, শ্রীমন্ত নন্দী, সুব্রত দত্ত থেকে বর্ধমান-গুসকরা লাইনের নিত্যযাত্রী সংগঠনের সম্পাদক অশোক চট্টোপাধ্যায়েরা দাবি করেন, ‘‘আশা তো অনেক কিছু ছিল। কিছুই মিলল না।’’ কাটোয়া লাইনে মহিলা কামরায় শৌচাগারের ব্যবস্থার দাবি বহু দিনের। ‘ইস্টার্ন রেলওয়ে প্যাসেঞ্জারস কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র সম্পাদক দেবাশিস বসুর বক্তব্য, ‘‘আগে কাটোয়াকে ঘিরে রেলের পরিকল্পনা দেখা যেত। বর্ধমান ও আহমেদপুর লাইন তৈরির পরেও এই বাজেটে সে রকম কোনও প্রতিফলন দেখা গেল না।’’

বর্ধমান স্টেশনে প্রাচীন ভবনের একাংশ ভেঙে পড়েছিল মাসখানেক আগেই। তার পরে পুরনো ভবনগুলি রক্ষার বিষয়ে রেলকর্তাদের তরফে আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু তার কোনও প্রতিফলন বাজেটে মেলেনি, অভিযোগ শহরবাসীর। রেল অনুমোদিত যাত্রী সংগঠনের প্রাক্তন সদস্য আশিস রায়ের বক্তব্য, “পুরনো প্রকল্পগুলি চালানো রেলের দায় হয়ে পড়েছে। নতুন প্রকল্প এখন হাতে নেওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রয়োজনে পরে ট্রেন বাড়াতে পারে। রেলের ‘পিঙ্ক বুক’ প্রকাশ হলে সব তথ্য পাওয়া যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন