পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে অটো-বাস বিবাদের স্থায়ী সমাধান চেয়ে বাস মালিকদের কাছে ১৫ দিন সময় চেয়েছিলেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। সেই আর্জি মেনে শুক্রবার সকাল থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করল আসানসোলের বাস মালিকদের সংগঠন। তবে বাস মালিকদের বক্তব্য, ১ মে’র মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে ফের ধর্মঘটের রাস্তায় হাঁটবেন তাঁরা।
গত বুধবার যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে অটো চালকদের সঙ্গে বিবাদ বাধে বাসকর্মীদের। এর পরেই ধর্মঘট শুরু করেন মিনিবাস মালিকেরা। তার পরে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার বাস ধর্মঘট শুরু হয়। দিনভর প্রশাসনের কর্তারা বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করলেও কাজ হয়নি। তার জেরে ব্যাপক নাকাল হতে হয় যাত্রীদের।
পরে জিতেন্দ্রবাবু পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলোচনার পরে বাস মালিক ও কর্মীদের কাছে ১৫ দিন সময় চান। মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘মেয়রের পদক্ষেপকে সম্মান জানিয়ে আমরা আপাতত ধর্মঘট তুলে নিচ্ছি।’’ তবে প্রশাসনের সূত্রে খবর, বাস মালিকেরা জানিয়েছেন, এই সময়সীমার মধ্যে শহরের কোথাও অটো চালকদের হাতে বাস কর্মীরা হেনস্থা হলে সঙ্গে সঙ্গে বাস বন্ধ করে দেওয়া হবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, গত প্রায় ১১ বছর ধরে আসানসোলে বাস, মিনিবাস মালিক ও অটোচালকদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। বাস মালিকদের দাবি, তাঁদের চলাচলের রাস্তায় অটো বন্ধ করতে হবে। অটো চালকদের পাল্টা দাবি, রুজির কারণেই শহরের রাস্তায় তাঁদের চলতে দিতে হবে। এর জেরে বহু বার অশান্তি, অবরোধ-বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের জেরে নাকাল হতে হয়েছে আসানসোল মহকুমার বাসিন্দাদের। দু’পক্ষকে নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক, চুক্তি-সহ নানা পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। কিন্তু কোনও কিছুই অটো-বাস বিবাদের স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি বলে জানান পরিবহণ কর্মীরা।
তা হলে এখন কী ভাবে মিটবে সমস্যা? বৃহস্পতিবারই পরিবহণ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন জিতেন্দ্রবাবু। প্রশাসনের সূত্রের খবর, অটোর রুট নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কোন কোন অটো চালককে রুট-পারমিট দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়র ইতিমধ্যেই পরিবহণ দফতরকে সরকারের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে যাতে যান চলাচল করে, তার পরামর্শ দিয়েছেন। বাস চলাচলের ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে পুলিশকেও পরামর্শ দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। আসানসোলের এসিপি (ট্রাফিক) প্রশান্ত দাস জানান, স্ট্যান্ডে বাস ঢোকা-বেরনোর রাস্তায় অটো দাঁড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুক্রবার জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দু’পক্ষের স্বার্থ বজায় রেখেই সমাধান সূত্র বের করা হবে।’’