কড়া ব্যবস্থা প্রশাসনের

ডিজেলের বদলে বাস চালানো হচ্ছে কেরোসিনে!

লাভ বাড়াতে ডিজেল ছেড়ে কেরোসিনে চলছে বাস— এমনই অভিযোগ উঠেছে কালনা মহকুমা জুড়ে। এতে একদিকে দূষণ বাড়ছে, আবার বাঁকা পথে রেশনের কেরোসিন চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের হাতে।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০৯:০০
Share:

লাভ বাড়াতে ডিজেল ছেড়ে কেরোসিনে চলছে বাস— এমনই অভিযোগ উঠেছে কালনা মহকুমা জুড়ে। এতে একদিকে দূষণ বাড়ছে, আবার বাঁকা পথে রেশনের কেরোসিন চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের হাতে।

Advertisement

প্রশাসনের দাবি, হাসপাতাল চত্বর, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি এক কেরোসিন বিক্রেতাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। জেলা পরিবহণ আধিকারিক মহম্মদ আব্রার আলম জানান, কেরোসিনে বাস চালানো বেআইনি। ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাস মালিকদের একাংশের দাবি, টোটো, অটোর রমরমায় বহু রুটেই বাসের যাত্রী কমেছে। অথচ বাস চালানোর খরচ গিয়েছে বেড়ে। ফলে লাভ কমেছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ডিজেল ছেড়ে দিয়ে কেরোসিনে বাস চালাচ্ছেন। কারণ এক লিটার ডিজেল কিনতে লাগে প্রায় ৬৪ টাকা, অন্যদিকে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায় মেলে কেরোসিন। এক একটি বাসে প্রতিদিন গড়ে ৫০ লিটার তেল লাগে। মালিকদের দাবি, কেরোসিনে চালালে যন্ত্রাংশের কিছুটা ক্ষতি হলেও দৈনিক সাশ্রয় হয় সাত থেকে আটশো টাকা। সবমিলিয়ে লাভের টাকা ঘরে ঢোকে বেশ কিছুটা।

Advertisement

বাস চালকেরা জানান, ‘ইউরো ২’ মডেলের বাসে কোনও পরিবর্তন না করেই কেরোসিনে চালানো যাচ্ছে। ‘ইউরো ৩’-এর ক্ষেত্রে বাসের পাম্প মেশিন পাল্টে নিতে হচ্ছে। তাতে নামমাত্র খরচ পড়ছে। তবে কেরোসিনে চালালে দু’বছরের মধ্যে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মেনে নিচ্ছেন তাঁরা। সেক্ষেত্রেও আবার বিশ-পঁচিশ হাজার টাকা খরচ করে সেকেন্ড হ্যান্ড ইঞ্জিন কিনে নিলেই সমাধান মিলছে। বাস মালিকদের একাংশের দাবি, কালনা শহরে শতাধিক বাস চলে। তার মধ্যে অন্তত তিরিশটি বাস এখনও কেরোসিনে চলছে।

কিন্তু কেরোসিন মিলছে কী ভাবে?

জানা যায়, গ্যাস ব্যবহার করায় বহু পরিবারই রেশনে পাওয়া তেল ৪০-৫০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করে দেন। রাস্তার আশপাশে গড়িয়ে ওঠা দোকান থেকে তা পান বাস মালিকেরা। আবার বাড়ি বাড়ি ঘুরে কেরোসিন কিনে সরাসরি বাস মালিকদের বিক্রি করেন এমন এজেন্টও রয়েছে। তাঁরাই জানান, পুলিশের ধরপাকড়ের পরে রাস্তায় খোলা কেরোসিন বিক্রি কমলেও চোরাগোপ্তা ভাবে এখনও চলছে।

মহকুমা প্রশাসনের অবশ্য দাবি, কেরোসিনে বাস চালানো অবৈধ। যে কোনও জায়গায় কেরোসিন বিক্রিও নিয়মবিরুদ্ধ। এমনকী, আইন ভাঙলে বাস মালিকদে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেওয়া হতে পারে বলেও কর্তাদের দাবি। কালনা বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের বার্তা সদস্যদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কেউ নিয়ম না মানলে সংগঠন তাদের পাশে থাকবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন