টিফিনের পরে পড়ুয়া ধরে রাখতে ক্যান্টিন স্কুলে

টিফিনের সময়ে বাড়িতে খেতে গিয়ে আর ফিরে আসে না পড়ুয়াদের অনেকে। এই সমস্যার সমাধানে স্কুলেই ক্যান্টিন চালু করেছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের পানশিউলি হাইস্কুল।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

লাউদোহা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৭:০০
Share:

পানশিউলি হাইস্কুলের ক্যান্টিনে। নিজস্ব চিত্র

টিফিনের সময়ে বাড়িতে খেতে গিয়ে আর ফিরে আসে না পড়ুয়াদের অনেকে। এই সমস্যার সমাধানে স্কুলেই ক্যান্টিন চালু করেছে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের পানশিউলি হাইস্কুল।

Advertisement

স্কুল সূত্রে জানা যায়, পড়ুয়াদের অনেকেই প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। বাড়ির আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল নয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়া হয়। কিন্তু তার থেকে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা টিফিনের সময়ে বাড়িতে খেতে যায়। শিক্ষকেরা জানান, প্রায় দিনই দেখা যাচ্ছিল, পড়ুয়াদের অনেকে টিফিনের পরে স্কুলে ফিরছে না। অনেকে আবার খাওয়া সেরে যাতায়াত করে ক্লাসে ঢুকতে পারত না নির্দিষ্ট সময়ে। এর জেরে টিফিনের পরে পঠনপাঠনে যোগ দিতে পারত না বড় অংশের পড়ুয়া।

এর পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন, টিফিনে স্কুল ছেড়ে কেউ যেতে পারবে না। তাই স্কুল শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হত মূল গেট। প্রধান শিক্ষক জীবনকুমার কুণ্ডু জানান, এই ব্যবস্থায় পড়ুয়াদের টিফিনের পরে স্কুলে রাখা গেল ঠিকই, কিন্তু তাদের খাওয়ার সমস্যা রয়ে গিয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের অনেকের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। তাঁরা জানিয়ে দেন, সকালে স্কুলে পাঠানোর সময়ে ছেলেমেয়েদের ভরপেট খাইয়ে পাঠানোর ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। এর পরেই কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন, স্কুলে সস্তার ক্যান্টিন খোলা হবে। ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় বাসিন্দা অক্ষয় ঘোষ ও তাঁর স্ত্রীকে। প্রধান শিক্ষক জীবনবাবু জানান, সুলভ মূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবার দিতে গত ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ক্যান্টিন।

Advertisement

কী কী মিলছে ক্যান্টিনে? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রুটি, তরকারি, ছোলাভাজা, বাদামভাজা, বিস্কুট এবং কলা, লেবু, আপেল-সহ নানা ধরনের ফল মিলছে। একটি রুটি ও আলু বা সব্জি অথবা সুজি মেলে মাত্র দু’টাকায়। ক্যান্টিনে ফাস্টফুড বিক্রি হয় না। প্লাস্টিকের থালা নয়, খাবার দেওয়া হয় শালপাতায়। প্রধান শিক্ষক-সহ শিক্ষকেরা নিয়মিত খোঁজ নেন খাবারের গুণমান ঠিক রয়েছে কি না। শিক্ষকেরাও অনেক সময়ে টিফিন খান এই ক্যান্টিনেই।

প্রধানশিক্ষক বলেন, ‘‘সকাল সাড়ে ১০টায় স্কুল গেট বন্ধ করে বিকেল সওয়া ৪টেয় খোলা হয়। টিফিনের পরে ক্লাস খালি হয়ে যাওয়ার সমস্যাটা মিটেছে।’’ এই ব্যবস্থায় খুশি প়ড়ুয়ারাও। অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, অনিমেষ মণ্ডল-সহ কয়েক জন পড়ুয়া বলে, ‘‘আগে অনেককেই বাড়ি যেতে হত টিফিন খেতে। এখন সেই সমস্যা মিটেছে। সবাই পুরো সময় স্কুলে থাকতে পারছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন