পুরস্কার মিললেও বেহাল পরিকাঠামো, অভিযোগ

জেলার একমাত্র মহকুমা হাসপাতাল হিসেবে ‘স্বাস্থ্যসম্মান’ পুরস্কার পেয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল। কিন্তু তার পরেও মঙ্গলবার হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশুর দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫১
Share:

হাসপাতাল চত্বরে ঘুরছে শুয়োর। নিজস্ব চিত্র।

জেলার একমাত্র মহকুমা হাসপাতাল হিসেবে ‘স্বাস্থ্যসম্মান’ পুরস্কার পেয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল। কিন্তু তার পরেও মঙ্গলবার হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশুর দল। শয্যা না থাকায় মহিলা বিভাগের মেঝেয় সদ্যোজাতকে নিয়ে কোনও ক্রমে রয়েছেন মা। এই পরিস্থিতিতে রোগীর আত্মীয়দের একাংশের কটাক্ষ, পুরস্কার মিললেও পরিকাঠামোয় রয়ে গিয়েছে বহু গাফিলতি।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ সমিতি জানায়, ২০১৬-য় সার্বিক কর্ম রূপায়ণ, তহবিলের টাকা খরচ, উন্নয়নের কাজ প্রভৃতি দেখেই কাটোয়ার হাসপাতালকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী মাতৃ সুরক্ষা যোজনা, কায়াকল্প প্রভৃতি প্রকল্পের রূপায়ণ এবং রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক নিয়মিত হওয়ার মতো বিষয়গুলি দেখে গত শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সুপার রতন শাসমলের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মাপকাঠিতে পুরস্কৃত হয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক সৌমেন শাসমল, সুশান্তবরণ দত্ত এবং নার্স দোয়েল দত্ত, কল্যাণী মণ্ডল, মন্দিরা সাহা ও নীলিমা মুখোপাধ্যায়।

কিন্তু পুরস্কার প্রাপ্তি ঘটলেও হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে রোগীদের ক্ষোভ রয়েছে। মাস চারেক আগেই মেঝেতে চট পেতে শুয়ে থাকা প্রসূতিদের দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। ‘কায়াকল্প’ (হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা) বিষয়েও অভিযোগ রয়েছে রোগীদের। রোগীর পরিবারের দাবি, হাসপাতাল চত্বরে গবাদি পশুর আনাগোনা এখনও লেগে রয়েছে। এ ছাড়া অব্যবহৃত দাহ্য বস্তু পড়ে থাকা, স্বাস্থ্য বিমা যোজনার কার্ড থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় সুবিধা না মেলা-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন পরিজনদের একাংশ। এই প্রকল্পে রোগীদের ওষুধ, আলাদা ঘর, আয়া প্রভৃতি পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয় না বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নতুনহাটের বাসিন্দা, এক রোগীর কথায়, ‘‘মাসখানেক আগে পেটে অস্ত্রোপচার হয়। আলাদা ঘর পাইনি। ওষুধও নিজেকেই কিনতে হয়েছে।’’

Advertisement

হাসপাতাল সুপার রতনবাবুর যদিও দাবি, ‘‘হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার রাখার জন্য পুরসভা ও মহকুমা প্রশাসনকে জানিয়েছি। হাসপাতালে যাঁরা গবাদি পশু ছেড়ে দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানায় জানিয়েছি।’’ তবে স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-সহ প্রকল্পের কাজে খামতি নেই বলে তাঁর দাবি।

‘স্বাস্থ্যসম্মান’ পেয়েছে মঙ্গলকোট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও। পুরস্কৃত হয়েছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক সঞ্জীব নন্দী ও নার্স চিন্তা হালদার। কিন্তু এখানেও পর্যাপ্ত শয্যার সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শিশির বিশ্বাস যদিও বলেন, ‘‘শয্যা না থাকায় অনেক রোগীকেই বর্ধমানে স্থানান্তরিত করতে হয়। তবে বিধায়ক নতুন ভবন তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন