সাত বছর আগে সুইমিং পুলে মিলেছিল দেহ, ছাত্রের মৃত্যুতে তদন্তে সিবিআই

শুক্রবার দুপুরে সিবিআইয়ের ডিআইজি অভয়কুমার সিংহের নেতৃত্বে একটি দল বর্ধমান শহরের কল্পতরু ময়দানের সুইমিং পুল ঘুরে দেখেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৬
Share:

কল্পতরু ময়দানের সুইমিং পুলে সিবিআই তদন্তকারীরা। নিজস্ব চিত্র

সাত বছর আগে শহরের এক সুইমিং পুলে দেহ মিলেছিল যুবকের। পরিকল্পনা করে খুনের অভিযোগ করে পরিবার। হাইকোর্টের নির্দেশের চার মাস পরে ঘটনার তদন্তে এল সিবিআই।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে সিবিআইয়ের ডিআইজি অভয়কুমার সিংহের নেতৃত্বে একটি দল বর্ধমান শহরের কল্পতরু ময়দানের সুইমিং পুল ঘুরে দেখেন। কথা বলা হয় পুল পরিচালন সংস্থার কর্তা ও কর্মীদের সঙ্গে। সর্বক্ষণ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মৃত ছাত্র রমেন সামন্তের বাবা দেবকুমার সামন্ত। তদন্তকারীরা চলে যাওয়ার পরে তিনি বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের উপর ভরসা আছে বলেই হাইকোর্টে গিয়েছিলাম।’’

বৃহস্পতিবার বর্ধমানের এক ছাত্র কৌশিক রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই ছাত্রের মা চন্দনাদেবী তাঁর ছেলেকে পরিকল্পিত খুনের অভিযোগ করেছিলেন। ওই দিনই কৌশিকের এক বন্ধু অনুজ ভগতও গাড়ি দুর্ঘটনায় সিঙ্গুরে মারা যান। সিবিআই সূত্রে জানা যায়, ওই দু’টি ঘটনার সঙ্গে তাঁর ছেলের খুনের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছেন দেবকুমারবাবু। তিনি গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, ওই দু’টি মৃত্যু দুর্ঘটনায় হয়নি জেনে ফেলার জন্যই তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে। সিবিআই কর্তারা তাঁকে ফের তদন্তের জন্য ডাকা হবে বলে জানিয়েছেন। বর্ধমান থেকে যাওয়ার পথে অনুজ ও কৌশিকের দেহ যেখানে মিলেছিল সেই জায়গাও ঘুরে দেখেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

২০১২ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে পুলের জলে দেহ মিলেছিল বিবেকানন্দ কলেজের ইংরেজি অনার্সের ছাত্র রমেনের। ঘটনার ছ’বছর পরে গত ১৫ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। রাজ্য সরকারকে সমস্ত নথি হস্তান্তরের নির্দেশও দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ ও সিআইডি ঘটনার তদন্ত করে জানিয়েছিল, ওই ছাত্র জলে ডুবে মারা গিয়েছে। বিচারপতি নির্দেশ দেওয়ার সময় রাজ্যের কৌঁসুলির উদ্দেশে মন্তব্য করেছিলেন, ‘সুইমিং পুলের জলে ডুবে কারও মৃত্যু হলে তাঁর ফুসফুসে বালি থাকবে কী করে? সুইমিং পুল তো কংক্রিটের।’

এ দিন পৌনে দু’টো নাগাদ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল কল্পতরু ময়দানে পৌঁছয়। সুইমিং পুলের মূল গেটটি বন্ধ করে শুরু হয় তদন্ত। প্রথমেই সুইমিং পুলের চারিদিক খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়। খুঁটিয়ে দেখা হয় ‘বেবিপুল’। অভিযোগকারীর সঙ্গে একান্তে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন সিবিআইয়ের ডিআইজি। পরে সুতো, লাঠি দিয়ে পুলের জলের গভীরতা মাপা হয়। রমেনের দেহটি পুলের যে প্রান্তে দেখা গিয়েছিল, সেই জায়গাটি বারবার পরীক্ষা করা হয়। খোঁজ নেওয়া হয় পরিচালন সংস্থা সম্পর্কেও। ওই সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক সৌগত হালদার বলেন, “ঘটনার সময় যিনি সম্পাদক ছিলেন, তিনি প্রয়াত। সেটা জানার পরে সিবিআই কর্তারা আমাদের সংস্থার বিভিন্ন নথি দেখেন। প্রয়োজনে আবার আসবেন বলে জানিয়ে গিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন