খুচরো নেই, খালি থলি নিয়েই বাড়িতে ক্রেতারা

হাতে পাঁচশো-হাজারের নোট। পকেটে ১০ টাকার কয়েন। তা নিয়ে বাজারে গিয়েছিলেন তেঁতুলতলা এলাকার এক প্রৌঢ়। কিন্তু বাড়ি ফিরলেন ব্যাজার মুখে, হাতের থলিটাও ফাঁকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

হাতে পাঁচশো-হাজারের নোট। পকেটে ১০ টাকার কয়েন। তা নিয়ে বাজারে গিয়েছিলেন তেঁতুলতলা এলাকার এক প্রৌঢ়। কিন্তু বাড়ি ফিরলেন ব্যাজার মুখে, হাতের থলিটাও ফাঁকা। বাজারে বিক্রেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, বাতিল নোট বা ১০ টাকার কয়েন, কোনওটাই নেবেন না। — শনিবার দিনভর কালনার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনই ছবি দেখা গেল।

Advertisement

সমুদ্রগড়ের রেল বাজারে সকাল থেকে সব্জির পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন সাজ্জাদ শেখ। দুপুরে চোখটা একটু লেগে এসেছিল তাঁর। ক্রেতারা কোথায়? সাজ্জাদ বলেন, ‘‘দু’এক জন ক্রেতা এসেছিলেন। কিন্তু কারও কাছেই খুচরো নেই। বিক্রি প্রায় কিছুই হয়নি।’’ —একই ছবি চকবাজার, নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির বাজারেও।

ব্যবসায়ীরা বাতিল নোট ও খুচরো না নেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন ক্রেতারাও। সকালে বাজারে গিয়েছিলেন শোভা ঘোষ, বাপি মালাকারেরা। কিন্তু প্রায় খালি হাতেই ফিরে আসতে হয়েছে। কেন? তাঁদের কথায়, ‘‘লক্ষ্মীর ঝাঁপি থেকে ১০ টাকার কয়েন নিয়ে বাজারে এসেছিলাম। কিন্তু খবর রটেছে, বাজার ছেয়েছে জাল কয়েনে। কেউ কোনও টাকাই নিলেন না। এ রকম অবস্থা আরও দু-তিন দিন চললে বাড়িতে হাঁড়ি চাপানোয় দায় হয়ে পড়বে।’’

Advertisement

তবে কোনও কোনও বিক্রেতা বাতিল নোট নিচ্ছেন বলে দেখা গেল। তবে তাঁদের শর্ত, ন্যূনতম ১৫০ টাকার জিনিস কিনতে হবে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বাজার কমিটির দাবি, বুধবার থেকে বিক্রি পায় তলানিতে ঠেকেছে।

খুচরো টাকা না থাকায় সমস্যা দেখা গিয়েছে শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমেও। বাতিল নোটের জেরে নার্সিংহোমের বিল মেটানো যাচ্ছে না বলে জানান রোগীর আত্মীয়রা। বিহারের ফতেপুরের বাসিন্দা ফুলিয়া সাহানি নামে এক জন যেমন বলেন, ‘‘পকেটে টাকা রয়েছে। কিন্তু তা কাজে এল না।’’ তবে পরিস্থিতি আন্দাজ করে যথাসম্ভব রোগীদের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন নার্সিংহোম মালিকেরা।

উল্টো দিকে, গত কয়েক দিনের মতো শনিবারেও কালনার বেশির ভাগ এটিএম থেকে টাকা তোলা যায়নি। ব্যাঙ্ক, ডাকঘরে দেখা গিয়েছে লম্বা লাইন। শহরের শাহু সরকার মোড়ে একটি ব্যাঙ্কের দ্বিতল ভবনের ক্যাশ কাউন্টার থেকে লাইন চলে আসে নিচের রাস্তায়। বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কে আবার দুপুরের পরে টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি আরও বাড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন