বুধবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের একটি বৈঠকে। নিজস্ব চিত্র
সভা চলছিল দলেরই একটি সংগঠনের। আইএনটিটিইউসি-র নাম নিয়ে সেখানে ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকজন স্লোগান দিতে থাকায় গোলমাল বাধল তৃণমূলের তফসিলি জাতি ও জনজাতি সংগঠনের বৈঠকে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁদের সরিয়ে বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে ডিএসপি-তে নিয়োগের ব্যবস্থা করছেন সংগঠনের নেতারা। বুধবার দুপুরে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে যান বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। মঞ্চ থেকে নেমে কোনওমতে পরিস্থিতি সামাল দেন তিনি।
এ দিন দুর্গাপুর পুরসভা লাগোয়া তথ্যকেন্দ্রে আসন্ন কিছু কর্মসূচি নিয়ে ওই বৈঠক চলছিল। তখনই বাবুরাম দাস নামে এক জনের নেতৃত্বে ৩৫-৪০ জন স্লোগান দিতে-দিতে ভিতরে ঢুকে পড়েন। ভি শিবদাসন মঞ্চ থেকে তাঁদের জানান, বৈঠকের পরে তাঁদের বক্তব্য শুনবেন। কিন্তু তাঁরা তাতে কান না দিয়ে স্লোগান চালিয়ে যান। শেষে মঞ্চ থেকে নেমে এসে ভি শিবদাসন কার্যত মুখে হাত চাপা দিয়ে তাঁদের থামান। তিনি বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন তাঁদের।
বাবুরামের অভিযোগ, ‘‘আমরা সবাই আইএনটিটিইউসি-র লোক। তবু আমাদের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর অনুগামীরা অর্থের বিনিময়ে বাইরে থেকে লোক এনে কাজে ঢুকিয়েছেন। বেতনের সামান্য অংশ কর্মীদের দিয়ে বাকিটা তাঁদের পকেটে ঢোকে।’’ অভিযুক্তদের দল থেকে বহিষ্কারের দাবিও তোলেন তাঁরা। পরে পুরসভার সামনে গাছতলায় শিবদাসন তাঁদের অভিযোগ শোনেন। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের বক্তব্য শুনেছি। কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।’’ প্রভাতবাবুর বিরুদ্ধে স্লোগান প্রসঙ্গে শিবদাসনের বক্তব্য, ‘‘তেমন কিছু নয়। ক্ষোভ জানানোর অধিকার সবার আছে। আমি সব পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করব।’’ প্রভাতবাবু অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, ‘‘আগেও বাবুরাম আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছিলেন।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রভাতবাবুর যেখানে বাড়ি সেই গোপালমাঠ এলাকাতেই থাকেন বাবুরাম। ২০১৭ সালের জুনে তিনি দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, তিনি এক জন ঠিকাদার। ডিএসপি-র হুইল অ্যান্ড অ্যাক্সেল প্ল্যান্টে কাজের বরাত পাওয়ার পরেও আইএনটিটিইউসি-র কয়েকজনের বাধায় কাজ করতে পারছেন না। গোপালমাঠের তৃণমূলের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে মারধর করার অভিযোগও করেছিলেন প্রভাতবাবুর বিরুদ্ধে। প্রভাতবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘বাবুরাম আইএনটিটিইউসি-র কেউ নন। বিজেপি-র সঙ্গে যোগ রয়েছে ওঁর।’’ শহরের বিজেপি নেতারা তা অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, এ দিনের ঘটনার পিছনে রয়েছে আইএনটিটিইউসি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই।