উদ্ধার: অভিযানে সিআইডি-র দল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
ক্রেতা সেজে গত সোমবারই পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার মণ্ডলহাটের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দত্তকে নবাবহাট থেকে অ্যাসিড-সহ গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। শনিবার ধৃতকে সঙ্গে নিয়েই তাঁর বাড়িতে অভিযান চালালেন সিআইডি-র কর্তারা। অভিযানে ফের অ্যাসিড উদ্ধার হয়েছে বলে সিআইডি-র তরফে জানানো হয়েছে।
এ দিন দুপুরে সিআইডি-র তদন্তকারীরা কাটোয়া থানার দু’জন পুলিশকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মণ্ডলহাটে বিশ্বজিতের বাড়িতে যান। তদন্তকারীদের দাবি, ‘‘ধৃতের বাড়ির গোয়ালঘরে রাখা দু’টি ড্রাম থেকে প্রায় ৯০ লিটার অ্যাসিড উদ্ধার হয়েছে।’’ তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, ড্রাম দু’টিতে সালফিউরিক মজুত করে রাখা হয়েছিল।
মিনিট কুড়ি মণ্ডলহাটে থাকার পরে বিশ্বজিৎকে সঙ্গে নিয়ে বারুজীবিপল্লিতে যায় তদন্তকারী দলটি। সেখানে বিশ্বজিতের শ্বশুরবাড়ি লাগোয়া কাঠা তিনেক জায়গার উপরে তৈরি একটি কারখানায় অভিযান চলে। তদন্তকারীদের দাবি, ওই কারখানাটি থেকেই অ্যাসিডের কারবার চালাতেন বিশ্বজিৎ। সেই কারবারে সঙ্গ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিশ্বজিতের মামা মাধব মহলাদারের বিরুদ্ধেও। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে সিআইডি কর্তারা জানান।
তবে এ দিন ওই কারখানায় তল্লাশি চালিয়ে অ্যাসিড মেলেনি বলে সূত্রের খবর। তদন্তকারীদের এক জনের অনুমান, ‘‘হয়তো অভিযানের খবর পেয়ে কোনও ভাবে অ্যাসিড সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’’ ধৃতের স্ত্রী বুল্টি দত্তের যদিও দাবি, ‘‘আমার স্বামী নির্দোষ। ওনাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
এর আগে বিশ্বজিতের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, গাড়ির ইঞ্জিন, ব্যাটারির জন্য জল (ডিস্টিলড ওয়াটার) তৈরি করতেন তিনি। ক্রেতা ছিলেন মূলত টোটো মালিকেরা। এর সঙ্গে শৌচাগার পরিষ্কারের ফিনাইল তৈরি করে কাটোয়ার বিভিন্ন স্টেশনারি দোকানে সরবরাহ করতেন তিনি। খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের সদস্য সুব্রত বিশ্বাস এ দিন দাবি করেন, ‘‘ফিনাইল জাতীয় মিউরিক অ্যাসিডের ব্যবসার জন্য পঞ্চায়েত থেকে ‘নো-অবজেকশন’ দেওয়া হয় বিশ্বজিৎকে। তবে তার আড়ালে, অ্যাসিডের বেআইনি কারবার চলত কি না, জানা নেই।’’ তবে কাটোয়া কাশীরাম দাস বিদ্যায়তনের রসায়নের শিক্ষক প্রশান্তকুমার ঘোষের দাবি, ‘‘ফিনাইল তৈরিতে গাঢ় নাইট্রিক অ্যাসিড ও সালফিউরিক অ্যাসিড দরকার হয়।’’