নাচে-গানে: দুর্গাপুর আদালত চত্বরে অনুষ্ঠান। ছবি: বিকাশ মশান
মোড়ে-মোড়ে বড় ফ্লেক্স। রাস্তার ডিভাইডার বরাবর পরপর ফেস্টুন। সন্ধে নামলেই নানা দফতর ঝলমল করছে নীল-সাদা আলোয়। শিল্প-শহর জুড়েই এমন উৎসবের মেজাজ।
দীর্ঘ দিনের দাবি মিটতে চলেছে আজ, শুক্রবার। খনি-শিল্পাঞ্চলকে নতুন জেলা ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে পুলিশ লাইন মাঠে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে তাঁর ঘোষণার পরেই যাত্রা শুরু করবে ‘পশ্চিম বর্ধমান’ জেলা। সেই উপলক্ষে গত কয়েক দিন ধরে সেজে উঠেছে আসানসোল ও দুর্গাপুর।
তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই জেলা ভাগের ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়েছিল। ২০১১ সালে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট তৈরি করা হয়। রাজ্যের প্রথম মহিলা থানা তৈরি হয় আসানসোলে। শিল্পাঞ্চলের ২৬টি কলেজ নিয়ে তৈরি হয় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১২-র শেষ দিকে আসানসোলকে স্বাস্থ্যজেলা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মহকুমা হাসপাতালকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। পরে আসানসোলের সঙ্গে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ ও কুলটিকে যোগ করে বড় পুরসভা গড়ে তোলা হয়। শেষমেশ এ বার তৈরি হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা। সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিভিন্ন পক্ষ শহরে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়েছে।
নতূন জেলার নামকরণ নিয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে আসানসোলেও। তবু শহর জুড়ে উৎসব শুরু হয়েছে দিন তিনেক আগে থেকে। নীল-সাদা এলইডি আলোয় সেজেছে শিল্পাঞ্চল। রঙের প্রলেপ পড়েছে সরকারি দফতরগুলিতে। আজ, শুক্রবার দুপুর দেড়টায় পুলিশ লাইনের সভায় আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।
তৃণমূলের শিল্পাঞ্চল সাংগঠনিক সম্পাদক পাপ্পু উপাধ্যায় জানান, প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের গাড়িতে করে সভায় পৌঁছনোর ব্যবস্থা হচ্ছে। সকাল ১১টা থেকেই সভাস্থলে মানুষজন পৌঁছবেন। দলের প্রত্যেক ব্লক কমিটিকে নিজেদের এলাকা আলো ও মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউট, ব্যানারে সাজানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চড়া রোদেও বহু মানুষ সভায় আসবেন অনুমান করে ঢালাও ঠান্ডা পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখছে প্রশাসন। এক কর্তার দাবি, প্রচণ্ড গরমের জন্য ঘণ্টাখানেকের মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গরম কাটাতে সভামঞ্চে বেশি সংখ্যায় কুলার ও দর্শকাসনে পাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সভা ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর আসা-যাওয়ার রাস্তা ছাড়াও সভাস্থলে থাকবেন প্রায় আড়াই হাজার পুলিশকর্মী। এ ছাড়া থাকবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। শহরের প্রত্যেক রাস্তার মোড় ও সভাস্থলে সিসি ক্যামেরার নজরদারি থাকছে। ইতিমধ্যে বার দশেক সভাস্থল ঘুরে দেখেছেন বিশেষ নিরাপত্তারক্ষীরা। বৃহস্পতিবার প্রস্তুতি পরিদর্শন করে যান রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও।