বার অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক থেকে বেরোচ্ছেন সিজেএম। নিজস্ব চিত্র।
১৮ দিন পরে বয়কট উঠতে চলেছে সিজেএম এজলাসে।
আইনজীবীদের দাবি মতো বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা জজ কুন্দনকুমার কুমাইয়ের সঙ্গে বর্ধমান বার অ্যসোসিয়েশনে আসেন সিজেএম সঞ্জয়রঞ্জন পাল। বিচারকদের চা ও মিষ্টি খাইয়ে আপ্যায়ন করেন আইনজীবীরা। পরে একান্ত আলোচনায় বিচারকরা আইনজীবীদের জানান, হঠকারীতা করে এজলাস বয়কটের আগে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করলে ভাল হয়। বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সদন তা বলেন, “আমাদের দাবি অনুযায়ী সিজেএম বার অ্যাসোসিয়েশনে এসেছিলেন। সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে সাধারণ সভার পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে।” জানা গিয়েছে, বিচারকরা ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, হাইকোর্টের নির্দেশে এবং জামিনে থাকা অভিযুক্তদের কথা ভেবেই তাঁরা এ দিন বার অ্যাসোসিয়েশনে গিয়েছিলেন।
গত ৩১ অগস্ট থেকে শুনানি পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সিজেএম এজলাস বয়কট করেন আইনজীবীরা। ৫ সেপ্টেম্বর বার কাউন্সিলরের এক প্রতিনিধি দল বয়কট তোলার অনুরোধ জানায়। কিন্তু উল্টে ওই দিন থেকে ‘জামিনদার’ হিসেবে সই করাও বন্ধ করে দেন আইনজীবীরা। ফলে সিজেএম এজলাস তো বটেই, বিশেষ আদালতের জামিন পেলেও ‘জামিনদারে’র অভাবে জেল থেকে বেরোতে পারেননি অন্তত একশো জন অভিযুক্ত। ল’ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারাও বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশন ও জেলা জজকে চিঠি দিয়ে সিজিএম এজলাসের অচলাবস্থা কাটানোর আর্জি জানান। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে ওঠে যে, আইনজীবীদের একাংশ প্রকাশ্যেই বয়কটের সিদ্ধান্ত ‘ভুল’ হচ্ছে বলে প্রচারও শুরু করে দেন।। ভাঙতে শুরু করে আইনজীবীদের সমন্বয়।
অবশেষে বর্ধমান আদালতের বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করে। বুধবার হাইকোর্ট গিয়েছিলেন জেলা জজ। ফিরে এসেই তিনি বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়ে নিজের ঘরে আসতে বলেন। আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বার অ্যাসোসিয়েশনের একটি দল জেলা জজ ও সিজেএমকে গিয়ে অনুরোধ করেন, ‘আপনারা একবার বারে গেলেই সমস্যা মিটে যাবে। চা খেতেই না হয় যাবেন।’ বিকেলেই বারে গিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে চা-মিষ্টি খান বিচারকরা।
তাঁরা চলে যেতেই বার অ্যাসোসিয়েশনের সামনে কয়েকজন আইনজীবীকে বলতে শোনা যায়, “কাদের স্বার্থে, কীসের জন্য ১৭ দিন ধরে এজলাস বয়কট হল বুঝতেই পারলাম না। বিচারপ্রার্থীদের কষ্ট দেওয়া তো আইনজীবীদের উদ্দেশ্য নয়। এ রকম হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কর্তাদের ভাবা উচিত।”