অভিযোগ ফরিদপুরের গ্রামে

ক্ষতিপূরণ চাওয়ায় বোমাবাজি

অন্ডাল বিমাননগরীর অধিগৃহীত জমির মধ্যে ন’শতক জমির মালিক পাটশ্যাওড়া গ্রামের বাসিন্দা বামাপদ সৌ ও উমাপদ সৌ। তাঁরা সরকারি নিয়মে জমিবাবদ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তাঁদের জমি দীর্ঘদিন ধরে ভাগ চাষ করেন গ্রামেরই বাসিন্দা অভয় গড়াই। তিনিও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ২৩:৫৭
Share:

আক্রান্ত: বাড়ির দরজায় বোমাবাজির চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র

জমির ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিবাদ ও তার জেরে বোমাবাজির ঘটনা ঘটল। গুলিও চলেছে বলে অভিযোগ। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি দু’জন। সোমবার দুপুরে ফরিদপুরের পাটশ্যাওড়া গ্রামের ঘটনা। তবে পুলিশ জানায়, রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

Advertisement

অন্ডাল বিমাননগরীর অধিগৃহীত জমির মধ্যে ন’শতক জমির মালিক পাটশ্যাওড়া গ্রামের বাসিন্দা বামাপদ সৌ ও উমাপদ সৌ। তাঁরা সরকারি নিয়মে জমিবাবদ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। তাঁদের জমি দীর্ঘদিন ধরে ভাগ চাষ করেন গ্রামেরই বাসিন্দা অভয় গড়াই। তিনিও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে দু’পক্ষ বসে বিষয়টি মিটিয়ে নেন। জমি মালিকেরা অভয়বাবুকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিতে সম্মতও হন বলে দাবি। অভিযোগ, এর পরেই ক্ষতিপূরণ দিতে টালবাহানা শুরু করেন জমি মালিকেরা। তাঁদের পক্ষ নিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করেন এক তৃণমূল নেতা।

অভিযোগ, সোমবার অভয়বাবু জমি মালিকদের বাড়িতে টাকা চাইতে গেলে তাঁকে বাধার মুখে পড়তে হয়। এর পরেই সদলবলে ওই তৃণমূল নেতা অভয়বাবুর বাড়ির সামনে বোমাবাজি করেন বলে অভিযোগ। শূন্যে গুলিও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। বোমার ‘স্‌প্লিন্টারে’ জখম হন অভয়বাবু ও তাঁর ছেলে পীযূষ। দু’জনকেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জখম আরও তিন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে অভয়বাবু এ দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘স্থানীয় তৃণমূল নেতা খোকন গড়াই ‘সিন্ডিকেট’ তৈরি করেছেন। আমাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের টাকা উনি হস্তগত করতে চান। তাই এই হামলা হয়েছে।’’ বোমাবাজির খবর পেয়ে ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা থেকে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়।

Advertisement

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে অন্ডালে প্রস্তাবিত বিমাননগরীর জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমিদাতাদের অভিযোগ, ২০০৭ থেকে হওয়া ওই অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণ পাননি বহু খেতমজুর ও বর্গাদার। অভিযোগ ওঠে জোর করে অধিগ্রহণেরও। যদিও সিপিএম তা অস্বীকার করে। রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে ‘জমি জোগাড়’ করতে কখনও ‘বুঝিয়ে’ কখনও বা ‘হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, কিছু তৃণমূল নেতা ‘সিন্ডিকেট’ও তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ জমিদাতাদের একাংশের।

যদিও এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিতবাবু বলেন, ‘‘পাটশ্যাওড়ার ঘটনায় দলের যোগ নেই। জমি সংক্রান্ত সমস্যা। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, “বোমাবাজি হয়েছে। গুলি চলেছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তল্লাশি শুরু হয়েছে।” এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন