মোমো আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল কাটোয়া থানার পুলিশ। শুক্রবার সকালে কাটোয়া কলেজের এক ছাত্রের অভিযোগের ভিত্তিতে কেতুগ্রামের শ্রীগ্রামের বাড়ি থেকে ধরা হয় অরিন্দম পাত্র নামে বছর উনিশের ওই ছাত্রকে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত ৮টা ৩৫ নাগাদ ‘মোমো’র ছবি দেওয়া একটি অপরিচিত (১ ৩১৫ ২৯১১২৭৩) নম্বর থেকে ‘হাই আই অ্যাম মোমো’ লেখা মেসেজ পান কেতুগ্রামের পাণ্ডগ্রামের বাসিন্দা, কাটোয়া কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জয়কৃষ্ণ পাল। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই তাঁর মোবাইল হ্যাক করে নেওয়া হয়েছে, মোমো খেলাতে হবে— এ ধরণের মেসেজও আসে। কোনও উত্তর না দিয়ে নম্বরটি ব্লক করে দেন জয়কৃষ্ণ। গৃহশিক্ষক জিৎ সরকারকে পুরো বিষয়টি জানিয়ে তাঁর কাছেই মোবাইলটি রেখেও দেন তিনি। পরের দিন কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্র। তদন্তে নেমে মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে ধৃত অরিন্দমের খোঁজ মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। এ দিন আদালতে তোলা হলে জামিন পান তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রথম বর্ষের ছাত্র অরিন্দম। কয়েক বছর আগে কাটোয়ার জানকীলাল শিক্ষাসদনে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে জয়কৃষ্ণ ও অরিন্দম একসঙ্গে পড়তেন বলেও জানা গিয়েছে। পালিটা রোডের একটি মেসেও একসঙ্গেই থাকতেন তাঁরা। ধৃতের বাবা, স্বর্ণ ব্যবসায়ী দীপঙ্কর পাত্র জানান, জয়কৃষ্ণ বয়সে বড় হলেও দু’জনে ভাল বন্ধু ছিল। ছেলে বন্ধুর সঙ্গে ঠাট্টা করত গিয়ে না বুঝেই এমনটা করে ফেলেছে বলে তাঁর দাবি।
সাইবের সেলের আধিকারিকদের দাবি, বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশী নম্বর তৈরি করা যায়। সেই নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের ‘ডিসপ্লে পিকচার’ বদলে যে কেউ নিজের মোবাইল থেকে মোমো-বার্তা দিতে বলেও তাঁদের দাবি। এ ক্ষেত্রে দুর্বল মনের মানুষদেরই ‘শিকার’ বানানো হচ্ছে বলেও জানান তাঁরা। ধৃতের আইনজীবী মহসিন খান বলেন, ‘‘ওই ছাত্রের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিচারকের কাছে জামিনের আর্জি জানাই। সপ্তাহে এক দিন করে থানায় হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওকে। আপাতত কোনও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন বিচারক।’’