ঘটনার পরে আতঙ্কে আহত পড়ুয়ারা।
স্কুল চত্বরেই দু’টি বাসের ধাক্কায় আহত হল জনা পঁয়ত্রিশ পড়ুয়া। মেমারির কালসি এলাকার একটি বেসরকারি স্কুলে শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। একটি বাসের জানলা গলে এক পড়ুয়া বাইরে পড়ে গুরুতর জখম হয়। তাকে বর্ধমানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এই ঘটনার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, বাসগুলির পরিকাঠামো নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা সত্ত্বেও কান না দেওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটল। পুলিশ আহত পড়ুয়াদের উদ্ধার করে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠায়। স্কুলবাস দু’টি আটক করা হয়। স্কুলের গাড়ির চালক, মালিক ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে মেমারি থানায় ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মেমারির ওই স্কুলে ১৪টি বাস রয়েছে। এ দিন স্কুল ছুটির পরে ৫ ও ১৪ নম্বর বাসের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একটি বাস স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিল। ঠিক পিছনে থাকা অন্য বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটির পিছনে ধাক্কা দেয়। তাতে পড়ুয়াদের কারও মাথায়, কারও হাত-পায়ে আঘাত লাগে। শুভ্র সরকার নামে এক ছাত্র জানলা দিয়ে নীচে পড়ে যায়। মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক শুভাশিস রায় জানান, মোট ৩৫ জন পড়ুয়ার চিকিৎসা হয়েছে। তার মধ্যে চার জনের মাথায় আঘাত রয়েছে। আর এক জন পড়ুয়ার আঘাত গুরুতর হওয়ায় বর্ধমানে পাঠানো হয়েছে। স্কুল সূত্রে জানা যায়, দাঁড়িয়ে থাকা বাসে ৩৫ জন ও চলন্ত বাসটিতে ৪২ জন পড়ুয়া ছিল।
আহত পড়ুয়া শিল্পী মণ্ডল বলে, ‘‘আমরা পিছনের বাসে ছিলাম। হঠাৎ বাসটি জোরে গিয়ে সামনের বাসে ধাক্কা দেয়। আমরা সবাই পড়ে যাই। ভয়ে চিৎকার করছিলাম।’’ দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেও আতঙ্কে রয়েছে অনেক পড়ুয়া। অভিভাবকদের দাবি, এর আগেও স্কুলের বাস দু’বার দুর্ঘটনায় পড়েছিল— এক বার ঘটেছিল হাটপুকুরের কাছে, অন্য বার স্কুলে ঢোকার মুখে। অভিভাবক শিখা সরকারের অভিযোগ, ‘‘তার পরেই গাড়ি সারানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল। কিন্তু হাল পাল্টায়নি। বড় কিছু ঘটে গেলে কী হত!’’ আর এক অভিভাবক সুদর্শন মজুমদারের ক্ষোভ, ‘‘ভাড়া দেওয়া সত্ত্বেও পড়ুয়াদের দাঁড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। স্কুলের বৈঠকে সে কথা জানালেও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি।’’
দুর্ঘটনাটি দুঃখজনক জানিয়ে স্কুল পরিচালন সংস্থার কর্ণধার তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের চিকিৎসার বিষয়ে তদারক করেছি। পুলিশকে খবর দিয়েছি। কেন এমন ঘটল তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পুলিশকে।’’ তাঁর দাবি, বাসগুলি ভাড়া নিয়ে চালাতে হয়। বাসকর্মীরা সব সময় স্কুলের নিয়ন্ত্রণে থাকেন না।