নিগৃহীত কর্তার পক্ষে শিক্ষকেরা, তদন্তে কমিটি

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সপ্তাহ খানেক আগে এক মহিলা রিসার্চ স্কলারের ‘ডেটা এন্ট্রি’ আপলোড করানোর জন্য সায়েন্স ফ্যাকাল্টির সচিব শুভপ্রসাদবাবুর কাছে যান ছাত্রনেতা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত আমিনুল ইসলাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

শাসকদলের ছাত্রনেতার হাতে আধিকারিক নিগ্রহের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য মহুয়া সরকারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কাজ শুরু করার দিনেই ওই আধিকারিক শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের হয়ে পথে নামলেন শিক্ষক ও সংস্কৃতি কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় কার্জন গেটে একটি সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আধিকারিকই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সপ্তাহ খানেক আগে এক মহিলা রিসার্চ স্কলারের ‘ডেটা এন্ট্রি’ আপলোড করানোর জন্য সায়েন্স ফ্যাকাল্টির সচিব শুভপ্রসাদবাবুর কাছে যান ছাত্রনেতা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত আমিনুল ইসলাম। অভিযোগ, তাতে আপত্তি জানানোয় শুভপ্রসাদবাবুকে নিগৃহ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা না করায় ক্ষোভ জানান ওই আধিকারিক। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়াতেও জানান তিনি। বিরোধী দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ ব্যাপারে উপাচার্যের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন। এরই মধ্যে শুভপ্রসাদবাবুর মেয়ে শবনম সুরিতা জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ঘটনার বিহিত চেয়ে ই-মেল করেছেন। সেখানে তিনিও উপাচার্যের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

জানা গিয়েছে, ঘটনার পরের দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তোফাজ্জল হোসেনকে একটি রিপোর্ট দিতে বলেন উপাচার্য নিমাই সাহা। রিপোর্টে রেজিস্ট্রার জানান, সে দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠক চলছিল। দুপুর ১টা ৪৯ মিনিটে শুভপ্রসাদবাবু ঘটনার কথা জানিয়ে মেসেজ করেন। মেসেজ অনুযায়ী ঘটনার শেষে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। ফলে বৈঠক ছেড়ে গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর কাছে মেসেজ আসার আগে ১টা ৪৬ মিনিটে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি জানানো হয়। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরে সহ উপাচার্য মহুয়া সরকার, কলা বিভাগের ডিন বি বি পারিদা-সহ চার জনের একটি ‘ফ্যাক্ট অ্যান্ড ফাইন্ডিংস’ কমিটি গঠন করেছেন উপাচার্য। সোমবার অভিযোগকারীকে ডেকে পাঠিয়েছে ওই কমিটি।

Advertisement

এ দিন শুভপ্রসাদবাবু দাবি করেন, “ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করল না। অভিযুক্তকে ডেকে আলোচনা হল। অথচ কমিটি গঠনের পরেই বৃহস্পতিবার দুপুরে আমাকে ডেকে পাঠালেন উপাচার্য। সেখানে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামের প্রশ্ন। এই লড়াই থেকে আমি সরছি না।’’ কর্তৃপক্ষের চুপ করে থাকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বামপন্থী বলে পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক প্রাক্তন আধিকারিক থেকে বর্তমান শিক্ষকেরা।

রেজিস্ট্রার যদিও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। উপাচার্যের সাফ কথা, ‘‘আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ ছাত্র নেতা আমিনুল ইসলামের দাবি, ‘‘সে দিন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন