ফল-বিভ্রাটের আতঙ্ক কেটেছে কি কাটেনি। এরই মধ্যে নতুন ভয়ের নাম প্রশ্নপত্রে ভুল।
কী কারণে প্রশ্নপত্রে ভুল হচ্ছে, তা জানতে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি গঠন করেছিল। সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও কমিটি কোনও রিপোর্ট জমা দেয়নি। সোমবার বাণিজ্য শাখার প্রশ্নপত্রে মূল নম্বরের গোলমাল ধরা পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফের তদন্ত কমিটি গঠন করার কথা বলেছেন। কিন্তু তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্র সংগঠনগুলি।
ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ, প্রশ্নপত্রে ভুল ধরার জন্য বারবার কমিটি গঠন করার ফলে মূল বিষয় থেকে অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে প্রুফ সংশোধন তো করে থাকেন নির্দিষ্ট বিষয়ের অধ্যাপকরা, বোর্ড অব স্টাডিজের সদস্যরা। পুরো বিষয়টিতে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়ে থাকে। বিষয়টি সমন্বয় করে থাকে পরীক্ষা নিয়ামক দফতর। বারবার একই ভুল হওয়ার পিছনে অন্তর্ঘাত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এসএফআইয়ের বর্ধমান জেলার সম্পাদক দীপঙ্কর দে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের সঙ্গে অন্য বিভাগের সমন্বয়ের অভাব থাকতে পারে। তার ফলেই হয়তো প্রশ্নপত্রে ভুল হচ্ছে।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা আমিনুল ইসলামের আবার দাবি, “প্রশ্নে এমন ভুল থাকছে, যা দেখে মনে হচ্ছে ইচ্ছা করেই ভুল করা হচ্ছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি আইনের স্নাতক পরীক্ষায় অর্থনীতি আর সমাজবিদ্যার প্রশ্ন এক হয়ে গিয়েছিল। পরীক্ষা বাতিল করে রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজাকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। ৬ ও ৮ ফেব্রুয়ারি পরপর দুটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে প্রশ্নপত্রে ভুল থাকার কারণ খুঁজে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। কিন্তু ঘটনা হল প্রায় দু’মাস হতে চলল এখনও ওই কমিটি কোনও রিপোর্ট জমা দেয়নি। একই ঘটনা ঘটে স্নাতকোত্তরস্তরে সংস্কৃত পরীক্ষায়। ১৭ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষায় দেখা যায় দুটি পত্রের প্রশ্ন মিলেমিশে তৈরি হয়েছে। একই ভাবে রেজিস্ট্রারকে আহ্বায়ক করে ১৭ ও ২০ ফেব্রুয়ারি বৈঠক করে ঠিক হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা পড়বে।
কেন সময়ে কাজ হল না?
দেবকুমারবাবু বলেন, “যা বলার উপাচার্য বলবেন।” উপাচার্য নিমাই সাহার সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, “এখনও কাজ চলছে।”