Complain Against Hospital

হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড, তবু হাসপাতালের দাবি ৮০ হাজার

জখম রবিকে ট্র্যাফিক পুলিশ প্রথমে গান্ধী মোড় সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:১৭
Share:

দুর্ঘটনাগ্রস্ত যুবকের বাবা। —নিজস্ব চিত্র।

‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড দেখে ভর্তি না নিলে বেসরকারি হাসপাতালগুলির লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তেমনই অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরের দু’টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হলেও, দাবি করা হচ্ছে টাকা, এমনই অভিযোগ করেছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক যুবকের পরিবারের সদস্যেরা। বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) দফতরেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

২৪ সেপ্টেম্বর সিটি সেন্টারের আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) ভবনের তিন তলায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। পরের দিন ঠিকাকর্মী, ওল্ড কোর্ট রোডের যুবক রবিকুমার রায় সেখান থেকে কাজ সেরে গান্ধী মোড়ের কাছে দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। তাঁর পায়ের উপর দিয়ে ডাম্পার চলে যায়।

জখম রবিকে ট্র্যাফিক পুলিশ প্রথমে গান্ধী মোড় সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার পরে, নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, দু’জায়গাতেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকায় বলা হয়, শয্যা ফাঁকা নেই। দুই হাসপাতালই অভিযোগ মানেনি।

Advertisement

এর পরেই, রবিকে বিধাননগর ফাঁড়ি সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু পরিবারের দাবি, হাসপাতালের দাবি মতো, তাঁদের ৮০ হাজার টাকা জমা দিতে হয়। তার পরে, ২৬ তারিখে অস্ত্রোপচার করে রবির ডান পা বাদ দেওয়া হয়। পরিবারের দাবি, এখন হাসপাতাল কর্ত়ৃপক্ষ আরও ৮০ হাজার টাকা চাইছেন। তাঁদের কাছে আর টাকা নেই। রবির বাবা শিবচন্দরের বক্তব্য, “আমার একমাত্র ছেলে। ডান পা বাদ চলে গিয়েছে। এখন টাকা না দিলে, চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলছে। আমাদের আর টাকা নেই। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড হাতে ঘুরছি শুধু।”

যদিও, অভিযোগ মানতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার গৌতম সাহা বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের এ ও বি, দু’টি ক্যাটেগরি রয়েছে। তাঁদের হাসপাতালটি বি-ক্যাটেগরির অন্তর্ভুক্ত। তাই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প অস্ত্রোপচারের সব খরচ বহন করে না। সে জন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে।” গৌতমের সংযোজন: “ওই যুবক সম্পূর্ণ সুস্থ এখন। আমরা রোগীর পরিবারকে বলেছি, আগে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে দিতে। তার পরে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে।”

এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুবিধা এ রাজ্যের মানুষকে পেতে দেয়নি তৃণমূল। এখন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেও চিকিৎসা হচ্ছে না। হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিলের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কোথায় কী!” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে লাগাতার প্রচার চলছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ জানেন, সেই কার্ডে চিকিৎসা করাতে গিয়ে কী দুর্ভোগ পোহাতে হয়!” বিরোধীদের অভিযোগে আমল দেননি তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে দুর্গাপুরেরই বেসরকারি হাসপাতালে জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছে। বহু গরিব মানুষ প্রাণ ফিরে পাচ্ছেন। তাই বিরোধীরা যেটা বলছেন, তার কোনও
ভিত্তি নেই।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement