প্রতীকী ছবি।
জেলায় বৈধ পাথর খাদানের সংখ্যা হাতে গোনা। অথচ অবৈধ পাথর খাদানের রমরমা গোটা পশ্চিম বর্ধমান জুড়েই। এর জেরে তাঁদের ব্যবসা লাটে উঠছে বলে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে আসানসোল স্টোন মাইন্স অ্যান্ড ক্রাশার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। এর জেরে সরকারের রাজস্ব ক্ষতিও বাড়ছে।
জেলার খনিজ দফতর সূত্রে জানা যায়, দামোদর ও অজয়ের লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকায় এক ধরনের মূল্যবান কালো রঙের পাথর পাওয়া যায়। যে কোনও ধরনের নির্মাণকাজে এই ধরনের পাথর ব্যবহার করা হয়। এই সমস্ত পাথর নিয়েই ব্যবসার জন্য জেলায় এই মুহূর্তে দু’টি বৈধ খাদান রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। এ ছাড়া আরও দু’টি খাদানকে অনুমতি দেওয়ার তোড়জোড় চলছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু খাদাম মালিক ও প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের চিন্তা বাড়়িয়েছে জেলা জুড়ে অবৈধ খাদানের রমরমা। অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দীপক মাজি বলেন, ‘‘রাজস্ব জমা করে আমরা পাথর তুলি। কিন্তু অবৈধ খাদান মালিকদের সে সব খরচের বালাই নেই। নিয়ম না মেনে তাঁরা পাথর তুলছেন। ফলে আমাদের থেকে অনেক কম দামে পাথর বিক্রিও করছেন তাঁরা।’’
অবৈধ খাদানের রমরমা কোথায় কোথায় চলছে? প্রশাসনেরই একটি সূত্রের মতে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খাস জমি ও বন দফতরের জমিতে এই ধরনের বেআইনি খাদনগুলি গজিয়ে উঠেছে। জেলার এক প্রশাসনিক কর্তার আক্ষেপ, ‘‘কোটি কোটি রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে এর ফলে।’’ খনিজ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের ডামরা, কালীপাহাড়ি, কাল্লা, রানিগঞ্জের চেলোদ, টিরাট, সালানপুরের কল্যাণেশ্বরী, মহেশপুর, বারাবনির কাশকুলি, বালিয়াপুর-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়লা-মাফিয়াদের দাপট রয়েছে। এক কর্তার হিসেবে, জেলায় অন্তত ৩৫টি অবৈধ পাথর খাদান রয়েছে এই মুহূর্তে।
এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে তাঁদের ব্যবসার পাততাড়ি গুটোতে হবে বলে আশঙ্কা দীপকবাবুর। তাঁর আরও অভিযোগ, বীরভূমের পাঁচামির অবৈধ খাদান থেকেও এই জেলায় প্রচুর পাথর ঢুকছে। এর জেরে পশ্চিম বর্ধমানের প্রায় দুশো পাথর ভাঙার কলগুলিও (ক্রাশার) সমস্যার মুখে পড়েছে। কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন ক্রাশারগুলির প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক।
পশ্চিম বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘নিয়মিত অবৈধ খাদানে অভিযান চালাচ্ছি। পাথর কাটার বহু যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অবৈধ খাদান মালিকদেরও গ্রেফতারও করা হয়েছে।’’ জেলার মুখ্য খনি আধিকারিক জয়দেব দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের বৈঠক হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’