প্রতীকী চিত্র।
হঠাৎ একশো দিনের কাজের পরিদর্শনে গিয়ে কাজের আগেই মাস্টাররোলে শ্রমিকদের সাক্ষর পেলেন কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে মন্তেশ্বরের মামুদপুর ১ পঞ্চায়েতের দুটি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা দুই সুপারভাইজারকে সরিয়ে দেন তিনি। পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক, সেক্রেটারি-সহ তিন জনকে শো-কজ করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে আচমকা এই পঞ্চায়েতের গোয়ালপাড়া এলাকায় যান মহকুমাশাসক। জমি উঁচু করার কাজ চলছিল সেখানে। মহকুমাশাসক দেখেন, জেসিবি যন্ত্রের সাহায্যে কাজ হচ্ছে না। প্রকল্পটির মাস্টার রোল চেয়ে নেন তিনি। দেখা যায়, ২২ জুন পর্যন্ত মাস্টার রোলে শ্রমিকদের সাক্ষর রয়েছে। কাজ হওয়ার আগেই সাক্ষর কেন? যথাযথ উত্তর দিতে পারেননি পঞ্চায়েতের আধিকারিকেরা। এরপরেই মহকুমাশাসক যান বালিয়াপুর গ্রামে। সেখানে দেখেন গ্রামবাসী নাসের আলি মণ্ডলের বাড়ির সামনে লাগানো রয়েছে একটি একশো দিনের প্রকল্পের সাইনবোর্ড। সেখানেও একটি নিচু জমি উঁচু করার কথা ছিল। তবে কাউকেই কাজ করতে দেখা যায়নি। ক্ষুব্ধ মহকুমাশাসক মাস্টাররোল দেখতে চান। দেখা যায়, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি দিন বহু শ্রমিকের সাক্ষর রয়েছে তাতে। এরপরেই গোয়ালপাড়ার সুপারভাইজার অনুপ ঘোষ এবং বালিয়াপুর গ্রামের শেখ মালেক হোসেনকে কাজ থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন তিনি। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘ওই দুই এলাকায় খাস জমি ছিল। তা সত্ত্বেও ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমিতে প্রকল্প দুটি নেওয়া হয়েছে। যেখানে মাটি কেটে কাজ করার কথা সেখানে জেসিবি মেশিনের শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন। মাস্টার রোলেও জালিয়াতির প্রমাণ মিলেছে।’’ তিন দিনের মধ্যে নির্মাণ সহায়ক, সেক্রেটারি-সহ তিন জনকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। ওই পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ আজিজুল বলেন, ‘‘সুপারভাইজারেরা অন্যায় কাজ করেছেন। কেন এমন ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
এলাকার দুটি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন মহকুমাশাসক। একটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন, শিশুরা খাবার নিয়ে যাচ্ছে। কর্মী, সহায়িকারা শিশুদের ওজন করানোতেও উদাসীন। ওই কেন্দ্রের সহায়িকা এবং কর্মীর বেতন স্থগিত করে শো-কজ করার নির্দেশ দেন মন্তেশ্বরের বিডিওকে। অন্য একটি অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন, সেটি বন্ধ হয়ে যায় সাড়ে দশটার আগেই। সেখানেও খাবার বাড়ি নিয়ে যায় শিশুর পরিবারের লোকেরা। এ ছাড়াও একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে আশাকর্মীদের কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন। মহকুমাশাসক জানান, আশা কর্মীরা ঠিকঠাক ডায়েরি না মেনে কাজ করছেন। তাঁদের সতর্ক করা হয়েছে।