ধর্ষণ করেই খুন ছাত্রীকে, অভিযোগ

শনিবার বিকেলে গলসির শাঁকড়াই ও হিট্টা গ্রামের মাঝামাঝি বাজনের পুলের পাশে ধানখেত থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বছর সতেরোর মেয়েটির স্কুলব্যাগ থাকলেও শরীরে কোনও পোশাক ছিল না

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০২:০১
Share:

পুলিশের গাড়ি আটকে চলছে বিক্ষোভ । নিজস্ব চিত্র

ছাত্রী নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরে পরিজনদের সঙ্গে খোঁজাখুঁজি করেছিল সে। নিখোঁজ ডায়েরিও করতে গিয়েছিল। গলসিতে ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পরে সেই ‘প্রেমিকের’ বিরুদ্ধেই ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ করল পরিবার। ঘটনায় ওই যুবকের কিছু বন্ধুও জড়িত বলে তাঁদের ধারণা, দাবি মৃতার পরিজনদের। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার ও ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের দাবিতে রবিবার পুলিশের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।

Advertisement

শনিবার বিকেলে গলসির শাঁকড়াই ও হিট্টা গ্রামের মাঝামাঝি বাজনের পুলের পাশে ধানখেত থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বছর সতেরোর মেয়েটির স্কুলব্যাগ থাকলেও শরীরে কোনও পোশাক ছিল না। ঘটনাস্থলে ঝোপ থেকে জুতো, জলের বোতল ও সাইকেল উদ্ধার হয়। রাতেই পুলিশের কাছে মৃতের বাবা লিখিত অভিযোগ করেন, শেখ পিটার ওরফে রাজ ও তার বন্ধুরা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করেছে বলে তাঁদের ধারণা। রবিবার দেহের ময়না-তদন্ত হয়।

এ দিকে এদিন সকালে ঘটনার তদন্তে যায় পুলিশ। তখন তাদের ঘিরে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের একটি গাড়ি প্রায় দু’ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে ঘটনাটি আরও পরিষ্কার হবে। তবে মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুন ও ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধর্ষণ ও খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত-সহ অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

Advertisement

এই রাস্তার পাশে ঝোপেই মিলেছে ছাত্রীর দেহ।

শাঁকড়াই গ্রামের বাসিন্দা ওই ছাত্রী কিশোরকোনা হাইস্কুলে পড়ত। তার বন্ধুদের দাবি, মাস কয়েক আগে একটি মেলায় পিটারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পিটারের বাড়ি বর্ধমানের সরাইটিকরে। পিটার ও এই ছাত্রী, দু’জনেরই মামারবাড়ি গলসির বাহিরঘন্না গ্রামে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে বলে ছাত্রীটির বন্ধুদের একাংশের দাবি। মেয়েটির পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে কুলগড়িয়া বাজারে খাতা কিনতে যাওয়ার নাম করে সাইকেল নিয়ে বেরোয় সে। সেখান থেকে তার টিউশনে যাওয়ার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ বাবাকে ফোন করেও কেটে দেয় সে। তার পর থেকে তার আর কোনও খোঁজ ছিল না। শনিবার ধানখেতে দেহ মেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যে জায়গায় দেহটি পড়েছিল তার চার পাশে ঝোপ-জঙ্গল৷ ফলে, রাস্তা দিয়ে মানুষ যাতাযাত করলেও জায়গাটি সহজে নজরে আসে না। দেহের নানা জায়গায় ক্ষতচিহ্ন দেখে এলাকাবাসীর দাবি, দেহ অ্যাসিডে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ঘটনার দিন দুপুরে পিটারের সঙ্গে ওই ছাত্রীকে কুলগড়িয়া বাজার ও খানো স্টেশন চত্বরে দেখা গিয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, মেয়ের বাড়ি না ফেরার খবর পেয়ে পিটার প্রথমে তাদের বাড়িতে ফোন করে। রাতে শাঁকড়াই গ্রামে আসে। এলাকায় খোঁজাখুঁজিও করে। নিখোঁজের ডায়েরি করতে থানাতেও গিয়েছিল।

কিন্তু ঘটনার কারণ নিয়ে পরিজন, স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পুলিশ, সকলেই ধন্দে। মেয়েটির মোবাইলের খোঁজ মিলছে না। পুলিশ জানায়, তদন্তে বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে। মোবাইলের সূত্র ধরে কিছু সূত্র মিলেছে। এ ব্যাপারে সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন