খালি মাথায়: কার্জন গেট চত্বরে জিটি রোডে।— নিজস্ব চিত্র।
সব ভাল যার শেষ ভাল।
প্রকৃতির সঙ্গে বিক্ষিপ্ত লড়াই হয়েছে। শেষ হাসি অবশ্য হেসেছে জনতাই। রাস্তায় তেমন যানজট বা বড় দুর্ঘটনা কিছু ঘটেনি। ধীরেসুস্থে লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখেছেন দর্শনার্থীরা। সব মিলিয়ে এ বার পূর্ব বর্ধমানে ভাল ভাবেই মিটেছে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব।
শহরের ভিতরে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকায় পুজো ক’দিন সন্ধ্যের পরে রাস্তা চলে গিয়েছিল আমজনতার দখলে। বয়স্ক মানুষজনও শান্তিতে চলতে-ফিরতে পেরেছেন। পুজো সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে গোড়া থেকেই তৎপর ছিল পুলিশ। ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক-কর্মী, ইভটিজিং রুখতে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। যদিও ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর প্রচার সত্ত্বেও মোটরবাইক চালকদের সচেতনতা যে বাড়েনি, তা পুলিশের রেকর্ডেই পরিষ্কার। জেলা পুলিশের হিসেবে, পুজোর চার দিনে গোটা জেলায় ৩৭৪১টি মামলা রুজু হয়েছে। জোরে মোটরবাইক চালানো, হেলমেট ছাড়া সওয়ার হওয়ার জন্য প্রায় ৮ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
ঠাকুর দেখা শুরু হয়েছে সেই চতুর্থী থেকে। মঙ্গলবারও কিছু মণ্ডপে প্রতিমা থাকবে। সে জন্য বেশ কিছু মানুষ রাস্তায় নামবেন ধরে নিয়ে পুলিশ তৈরি হচ্ছে। সপ্তমী-অষ্টমীর থেকেও মহানবমীর রাতে শহরে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। কাছাকাছি ভিড় হয়েছিল দশমীর রাতেও। বর্ধমান শহর ছাড়িয়ে ভিড় পৌঁছে গিয়েছিল বড়শুলে। সেখানে তিনটি মণ্ডপে রাত ৩টেতেও লাইন ছিল।
মেমারির চেকপোস্ট থেকে বামুনপাড়া মোড় পর্যন্ত নবমীর রাতে পা রাখা দায় হয়ে ওঠে। জাজিগ্রাম এবং ন’নগরে ভিড় উপচে পড়েছিল। বছর-বছর পুজো বাড়ছে, পুজো-ম্যাপে সংযোজিত হচ্ছে নতুন এলাকা। নানা পুজো কমিটির কর্তারা জানান, জনতার চাপ ভাল সামাল দিয়েছে জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সকলের সহযোগিতার জন্যই চাপ সামলানো গিয়েছে।’’
তবে বর্ধমান পুরসভার ভূমিকায় অখুশি কিছু পুজো উদ্যোক্তা ও দর্শনার্থীরা। অভিযোগ, জিটি রোডের একাংশ অন্ধকার ছিল। দর্শকদের জন্য রাস্তায় শৌচাগার ও পানীয় জলেরও বিশেষ ব্যবস্থা ছিল না। আবর্জনাও ঠিকমতো সাফ হয়নি। পুর-কর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘‘ভালয়-ভালয় সব মিটে গিয়েছে তো!’’