মৃত্যুতেও ফেরেনি হুঁশ, রাস্তা জুড়ে ডাঁই করা বালি

বিরোধীদের অভিযোগ, পুরসভা নিস্পৃহ থাকার জন্যই ব্যবসায়ীরা রাস্তা জবরদখল করে নির্মাণসামগ্রী রাখছেন। যদিও অভিযোগ মানতে চাননি মেমারির উপপুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্ত। তাঁর কথায়, “পুরসভা ও পুলিশ যৌথ ভাবে সচেতন করেছে। আরও কড়া হাতে মোকাবিলা করতে হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেমারি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:২১
Share:

রাস্তার পাশেই। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরেও টনক নড়ে নি! সোমবার সকালেও মেমারির পারিজাতনগরের রাস্তার দু’ধারে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে নির্মাণ সামগ্রী।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা, বিরোধীদের অভিযোগ, পুরসভা নিস্পৃহ থাকার জন্যই ব্যবসায়ীরা রাস্তা জবরদখল করে নির্মাণসামগ্রী রাখছেন। যদিও অভিযোগ মানতে চাননি মেমারির উপপুরপ্রধান সুপ্রিয় সামন্ত। তাঁর কথায়, “পুরসভা ও পুলিশ যৌথ ভাবে সচেতন করেছে। আরও কড়া হাতে মোকাবিলা করতে হবে।”

রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় ট্রাকের চাকার তলায় পিষে মারা যান পারিজাতনগরের বধূ লিপিকা বিশ্বাস (২৬)। পুলিশ জানিয়েছে, সাইকেলে করে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার ধারে নির্মাণসামগ্রী পড়ে থাকায় ট্রাকটিকে পাশ দিতে পারেননি তিনি। ট্রাকটি ধাক্কা মারলে সাইকেল থেকে ছিটকে চাকার তলায পড়ে যান তিনি। ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা মেমারি-তারকেশ্বর রোডে বেআইনি নির্মাণসামগ্রী না রাখার দাবিতে অবরোধ করে। পরে পুলিশ দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

Advertisement

এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার ধারে ইট, বালি-পাথর পড়ে রয়েছে। নির্মাণ কাজে যন্ত্রও রাখা রয়েছে রাস্তার ধারে। তার পাশ দিয়েই দেদারে ছুটছে বাস, ট্রাক। জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে একই ভাবে নির্মাণসামগ্রীর ফাঁদে পড়ে মারা গিয়েছিলেন লিপিকাদেবীর এক আত্মীয়। পারিজাতনগরের অন্য বেশ কয়েকটি পরিবারও একাধিক দুর্ঘটনার সাক্ষী। এলাকার তুহিন সরকার, রূপচাঁদ দাসদের কথায়, “নির্মাণ সামগ্রী ডাঁই করে রাখার সঙ্গে জু়ড়েছে বেহাল রাস্তা। পরিস্থিতি ভয়ানক।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর পালশিট টোলপ্লাজা এড়াতে বালি, পাথর বোঝাই ট্রাক, ডাম্পারগুলি জামালপুরের এই রাস্তা ধরেছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তা নষ্ট হয়ে পড়ছে। পারিজাতনগরে দুটি হাম্প ছিল, রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে তাও বেহাল।

বিরোধীদের অভিযোগ, শুধু পারিজাতনগর নয়, মেমারি শহর জুড়েই রাস্তার উপর বালি-পাথর রাখার প্রবণতা বাড়ছে। কোথাও সরকারি উদ্যোগে, কোথাও ব্যক্তিগত বাড়ি তৈরির সামগ্রীও রাস্তায় রেখে কাজ চলছে। পুরসভার নজরদারি নেই বলেও বিরোধীদের অভিযোগ।

লিপিকাদেবীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, যমজ নাতিকে কোলে নিয়ে বসে রয়েছেন প্রফুল্লবাবু। তাঁর প্রশ্ন, “আর কতগুলি প্রাণ গেলে হুঁশ ফিরবে?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন