প্রতীকী ছবি।
নতুন জেলায় হাতের কাছে মিলবে দফতর। সমস্যার সুরাহা হবে তড়িঘড়ি। এমনটাই ভেবেছিলেন খনি-শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পশ্চিম বর্ধমান জেলা গঠনের পরে প্রায় পাঁচ মাস কেটে গেলেও শিক্ষা দফতরের কার্যালয় তৈরি হয়নি। ফলে, এখনও আগের মতোই স্কুলের নানা কাজকর্মের জন্য বর্ধমান ছুটতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। দ্রুত জেলা শিক্ষা দফতরের কার্যালয় তৈরির দাবি জানিয়েছে নানা শিক্ষক সংগঠন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে।
জেলা ভাগের পরে সরকারি দফতরগুলিতে কাজের চাপ বেড়েছে। কিন্তু শিক্ষা দফতরের জেলা পরিকাঠামো তৈরি না হওয়ায় কাজে গতি আসছে না বলে অভিযোগ প্রশাসনেরই একটি অংশের। সমস্যায় পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। দফতরের সব কাজের জন্যই তাঁদের আগের মতো সেই বর্ধমানে যেতে হচ্ছে। নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিটিএ) নেতা প্রদীপ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘মৃত বা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পেনশনের কাগজপত্র আটকে যাচ্ছে। ভবিষ্যনিধির হিসেব মিলছে না। বদলি সংক্রান্ত কাজেও বাধা পড়ছে।’’ তিনি জানান, দ্রুত জেলা কার্যালয় চালুর দাবিতে ইতিমধ্যে সহকারী জেলা পরিদর্শকের দফতরে দু’বার স্মারকলিপি দিয়েছেন তাঁরা।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানে ১৬টি প্রাথমিক শিক্ষাচক্রে প্রায় ১৩০০ প্রাথমিক স্কুল ও ৩০১টি হাইস্কুল আছে। সম্পূর্ণ জেলা পরিকাঠামোর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে এক জন কাউন্সিল চেয়ারম্যান, এক জন জেলা স্কুল পরিদর্শক, দু’জন সহকারী পরিদর্শক ও ১৬ জন শিক্ষাচক্র পরিদর্শক প্রয়োজন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এক জন জেলা স্কুল পরিদর্শক, দু’জন অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শক ও ছ’জন সহকারী পরিদর্শক দরকার। কিন্তু এই মুহূর্তে আধিকারিকের সংখ্যা অর্ধেকেরও কম। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পাল বলেন, ‘‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আধিকারিকের সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করেছি।’’
এবিপিটিএ-র রাজ্য নেতা সুব্রত ঘোষ অভিযোগ করেন, প্রাথমিক কাউন্সিল তৈরি না হওয়ায় হিন্দুস্তান কেব্লসের মতো নানা এলাকার স্কুলের বিভিন্ন সমস্যা ঝুলে রয়েছে। দ্রুত জেলা কার্যালয় তৈরি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি নিমাই মহন্তও। তবে তাঁরা এ ব্যাপারে প্রশাসনের উপরে ভরসা রাখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয়বাবু বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কাছে বিশদে লিখে পাঠানো হয়েছে।’’