ভল্ট ভেঙে টাকা গায়েব, মেলেনি সূত্র

রবিবার দুপুরে জেলার সিআইডি ডিএসপি দেবজ্যোতি ভৌমিকের নেতৃত্বে পাঁচ জনের দল ঘটনার তদন্ত করতে যান। তদন্তে পুলিশকে তারা সাহায্য করছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও ওই দলের সদস্যেরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এই পরিস্থিতিতে পেনশনের টাকা কবে মিলবে, তা জানাতে পারেনি ডাকঘর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১১
Share:

ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল। — নিজস্ব চিত্র।

নবমীর সকালে পেনশনের টাকা তুলতে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীরা ভিড় জমিয়েছিলেন বর্ধমান মুখ্য ডাকঘরে। কিন্তু ডাকঘরের কর্মীরা হঠাৎই জানান, বর্ধমান ট্রেজারিতে ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি গিয়েছে। পুলিশ ও ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৫৫ লক্ষ ১০ হাজার টাকা খোয়া গিয়েছে। তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এই ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ।

Advertisement

রবিবার দুপুরে জেলার সিআইডি ডিএসপি দেবজ্যোতি ভৌমিকের নেতৃত্বে পাঁচ জনের দল ঘটনার তদন্ত করতে যান। তদন্তে পুলিশকে তারা সাহায্য করছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও ওই দলের সদস্যেরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এই পরিস্থিতিতে পেনশনের টাকা কবে মিলবে, তা জানাতে পারেনি ডাকঘর কর্তৃপক্ষ।

ডাকঘর সূত্রে জানা যায়, বুধবার পেনশনের টাকা বাবদ এক কোটি ১৯ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা আসে। শুক্রবার তা বিলির কথা ছিল। সেই মতো টাকা আনতে সে দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেজারিতে যান ডাকঘরের কর্মীরা। তাঁরা জানান, গিয়ে দেখা যায়, ভল্ট ভাঙা। খোয়া গিয়েছে প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা। এর পরেই বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেন ডাকঘরের সিনিয়র পোস্টমাস্টার প্রবাল বাগচি। ডাককর্মীদের দাবি, বুধবার পুলিশের সামনেই কাপড়ের প্যাকেটে টাকা ভরে ‘সিল’ করে দেওয়া হয় ভল্ট।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের অবশ্য দাবি, সরাসরি ট্রেজারি থেকে টাকা লোপাট হয়নি। ট্রেজারি ভবনে থাকা ভল্টগুলি কয়েকটি দফতর ব্যবহার করে। তেমনই একটি ভল্টে টাকা কম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (‌‌হেডকোয়ার্টার) পুষ্পা কুমারী। তিনি শুধু বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডাকঘরের কর্মী থেকে ট্রেজারির পুলিশ ক্যাম্পের কর্মী, সবাইকে জেরা করা হচ্ছে। তবে ঠিক কোন সময়ে টাকা চুরি গেল, তা এখনও পুলিশের অজানা। সিসিটিভি ফুটেজ হাতে এলে বিষয়টি খানিকটা পরিষ্কার হবে বলে মনে করছে তারা।

পুজোর মধ্যে হাতে টাকা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, জেলাশাসকের দফতর, বর্ধমান মহিলা থানা, বর্ধমান আদালত চত্বর-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে ট্রেজারি ভবনের আশপাশে। এমন জায়গাতেও এই ঘটনা কী ভাবে ঘটল, প্রশ্ন তাঁদের। সন্তোষকুমার সাউ, রূপক হাজরাদের মতো অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের আক্ষেপ, ‘‘উৎসবের মরসুমে বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের আনাগোনা। হাতে টাকা নেই। কী ভাবে যে চলবে জানি না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন