প্রতীকী ছবি।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক নাবালকের বাবার। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একটি ‘পোস্ট’ নজরে পড়েছিল সমাজকল্যাণ দফতরের কর্মীদের। এর পরেই তাঁরা ছুটে যান রায়নার এক গ্রামে, শিশুটির খোঁজ নিতে। শিশুটি ও তার পরিবারকে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়।
করোনায় কোনও শিশুর বাবা বা মায়ের মৃত্যু হলে এ ভাবেই পাশে থাকার নির্দেশ মিলেছে বলে পূর্ব বর্ধমান জেলা সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সম্প্রতি দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা প্রতিটি জেলাকে নির্দেশ দিয়েছেন, এ ব্যাপারে যাবতীয় তথ্য জোগাড় করে ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ তৈরি করতে হবে। দফতর সূত্রে জানা যায়, ‘অনাথ’ শিশুদের সম্পর্কে বিশদ তথ্য ‘বাল স্বরাজ’ পোর্টালে তোলার জন্য শিশু সুরক্ষা আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রের শিশু সুরক্ষা কমিশনও। করোনা-আক্রান্ত বাবা-মায়ের জন্য শিশুদের দেখভালে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা দেখার কথাও বলা হয়েছে।
জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিক প্রশান্ত রায় বলেন, ‘‘কোনও শিশুর বাবা বা মা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে, সরকার তার পাশে থাকবে। তাকে দেখার কেউ না থাকলে সরকার ‘চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউট’-এ রাখবে। ওই শিশুর অন্য অভিভাবকেরা তার দায়িত্ব নিলেও আমরা নিয়মিত খোঁজখবর নেব। সে কারণেই যে কোনও সূত্র থেকে খবর এলে আমাদের কর্মীরা ছুটে যাচ্ছেন।’’
দফতর সূত্রে জানা যায়, বাবা-মা করোনায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় দেখার কেউ নেই, এমন শিশুদের রাখার জন্য পূর্ব বর্ধমান জেলায় বামচাঁদাইপুরে মেয়েদের জন্য ও বর্ধমান শহরে ছেলেদের জন্য ‘চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউট’ খোলা হয়েছে। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরে, অভিভাবকেরা শিশুদের বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত পূর্ব বর্ধমান জেলায় এমন শিশুর খোঁজ মেলেনি বলে সমাজকল্যাণ দফতর জানায়। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক (ডিসিপিও) সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা এখনও ‘বাল স্বরাজ’ পোর্টলে রিপোর্ট শূন্য বলেই লিখে পাঠাচ্ছি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চাইল্ডলাইনকেও এ বিষয়ে এগিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চাইল্ড লাইনের তরফে কোনও শিশু বিপন্ন বা অনাথ হয়ে পড়েছে কি না, খোঁজ রাখা হচ্ছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপনও দিয়েছে। করোনা-পর্বে চাইল্ডলাইনের দফতর ২৪ ঘণ্টা খুলে রাখা হচ্ছে বলে বর্ধমানের কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ চৌবে জানান। তিনি বলেন, ‘‘সমাজকল্যাণ দফতরের নির্দেশে আমরাও এ ধরনের শিশুদের খোঁজ করছি।
তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কেউ কোনও তথ্য পেলে, আমাদের সঙ্গে বা সমাজকল্যাণ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।’’ সমাজকল্যাণ দফতর জানায়, বিষয়টি নিয়ে কোথাও ট্যাবলো করে তো কোথাও ফ্লেক্সের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।