সুনসান: ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ি। নিজস্ব চিত্র
ভক্তদের জন্য বুধবার থেকে বন্ধ হয়ে গেল দুর্গাপুরের প্রাচীন ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ির দরজা। কাঁকসার গোপালপুর গ্রামের প্রাচীন গাজন উৎসবও পালিত হবে কোনও রকমে। ‘করোনা’ নিয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরে ভক্তদের সমবেত হওয়া রুখতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানান উদ্যোক্তারা।
মন্দিরের গায়ে খোদাই করা ফলক অনুযায়ী, ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৫২ সালে। দেশ-বিদেশ থেকে ভক্তেরা এই মন্দিরে আসেন। ‘লকডাউন’-এর সময়েও ভক্তদের কেউ কেউ এসেছেন। সরকারি নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে তাঁদের মন্দিরে ঢুকতে দিয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যেরা।
কিন্তু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এ বার মন্দিরে ঢোকার সদর দরজা পুরোপুরি তালা বন্ধ করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। বুধবার থেকেই তালা দিয়ে দেওয়া হয়েছে গেটে। নীলষষ্ঠীতে এবং পয়লা বৈশাখে অগণিত মানুষ পুজো দিতে আসেন মন্দিরে। এ বার সব বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের প্রধান সেবাইত সাধনকুমার রায় বলেন, ‘‘মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। সবাই সুস্থ থাকুন, এই কামনা করি।’’ তবে মন্দিরে তালা পড়লেও পুরোহিত সকাল, সন্ধ্যা, দু’বেলায় নিত্য পুজো করছেন।
প্রভাব পড়েছে গাজন উৎসবেও। একই কারণে এ আগে পাশের জেলা বাঁকুড়ায় এক্তেশ্বর শিবমন্দির কমিটি এ বার গাজন উৎসব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্তেশ্বর শিবমন্দির কমিটির সদস্য উজ্বল দেওঘরিয়া জানিয়েছেন, ১৩ এপ্রিল থেকে গাজন হওয়ার কথা ছিল। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় তা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্দিরও বন্ধ রয়েছে। শুধু পুরোহিত নিত্য সেবা করছেন।
কাঁকসার গোপালপুরের ‘ভুবনেশ্বরের’ গাজনেও কড়াকড়ি থাকবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। এখানে গাজন হয়ে আসছে প্রায় দু’শো বছর ধরে। নীলষষ্ঠীর রাতে গাজন উৎসব আয়োজিত হয়। উৎসবে শামিল হন গ্রামের হাজার দশেক বাসিন্দা। উদ্যোক্তাদের তরফে তপন মণ্ডল জানান, উৎসব আয়োজিত হলেও ভিড় এড়াতে গ্রামের পূর্বপাড়ার জন্য এক দিন এবং পশ্চিমপাড়ার জন্য একদিন বরাদ্দ রাখা হবে। নির্দিষ্ট শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে পুজো দেবেন গ্রামের মহিলারা। কোনও রকমে গাজন সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তপনবাবু।