মেয়েটাকে অনাথ হতে দেওয়া যাবে না, শপথ দম্পতির

সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ বর্ধমানের সদরঘাট বংপুর মোড়ে একটি মন্দির চত্বরে পড়েছিল সদ্যোজাত কন্যাসন্তানটি। রিনা চৌধুরী নামে বর্ধমানের সদরঘাটের ওই যুবতী গিয়ে দেখেন, সদ্যোজাতকে ছেঁকে ধরেছে পিঁপড়ের দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:১৮
Share:

সদ্যোজাতের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

দুপুরে সবে খাওয়াদাওয়া হয়েছে। হঠাৎ খবর, কাছেই একটা মন্দিরে না কি এক সদ্যোজাতকে কে বা কারা যেন ফেলে রেখে গিয়েছে। ঘর থেকে ছুটে যান এক যুবতী। কোলে তুলে নেন সদ্যোজাত কন্যা সন্তানটিকে। আপাতত তিনি ও তাঁর স্বামী অপেক্ষায়, আইনি পদ্ধতি মেনে সদ্যোজাতকে ‘দত্তক’ নেওয়ার। রবিবার বর্ধমানের ঘটনা।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। ওই দিন দুপুর ৩টে নাগাদ বর্ধমানের সদরঘাট বংপুর মোড়ে একটি মন্দির চত্বরে পড়েছিল সদ্যোজাত কন্যাসন্তানটি। রিনা চৌধুরী নামে বর্ধমানের সদরঘাটের ওই যুবতী গিয়ে দেখেন, সদ্যোজাতকে ছেঁকে ধরেছে পিঁপড়ের দল। রিনা বলেন, ‘‘মেয়েটাকে ঘরে নিয়ে আসি। খোঁজ শুরু করি ওর বাবা-মায়ের। পাইনি। তার পরে আমি আর আমার স্বামী মিলে ঠিক করি, মেয়েটাকে আমরাই মানুষ করব।’’

বেশ চলল কয়েক দিন। কিন্তু তার পরেই ফের বিপত্তি বাধল। সদ্যোজাত কন্যাটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে নিয়ে রিনা ও তাঁর স্বামী জয়রাম ছুটে যান এক চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু শিশুটির নাম বা অভিভাবক পরিচিতি না থাকায় চিকিৎসক পরামর্শ দেন প্রশাসনে যোগাযোগ করতে। এর পরেই ওই দম্পতি যোগাযোগ করেন জেলা চাইল্ড লাইনের সঙ্গে।

Advertisement

রবিবার চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা ওই একরত্তির শিশু এবং ওই দম্পতিকে নিয়ে প্রথমে বর্ধমান থানায় আসেন। তার পরে নানা নিয়ম মেনে তাকে বর্ধমান মে়ডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে সঙ্গ ছাড়েননি রিনা ও পেশায় ট্রাকের চালক জয়রাম। থানা থেকে হাসপাতাল যাওয়ার পথেই রিনা ও জয়রাম বলেন, ‘‘আমাদের আট বছরের এক ছেলে রয়েছে। ভাবব, আমাদের আরও একটা সন্তান হয়েছে।’’

তবে চাইল্ড লাইন সূত্রে জানা যায়, মেয়েটিকে দত্তক নিতে গেলে বেশ কিছু আইনি পদক্ষেপ করতে হবে। রিনা বলেন, ‘‘আপাতত ও সুস্থ হোক। তার পরে আদালতে গিয়ে নিয়মমতো আর্জি জানাব। ওকে অনাথ হতে দেব না।’’ বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন চাইল্ড লাইনের দুই প্রতিনিধি মালতী মুর্মু ও নোয়েল ভিক্টর খালকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন