নির্দেশ না মানায় আসানসোল জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে (সিএমওএইচ) রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিল আদালত। আহত এক বন্দির আঘাত সংক্রান্ত রিপোর্টের ব্যাখ্যায় অসন্তুষ্ট হয়ে ওই চিকিৎসককে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছিল আসানসোল আদালত। কিন্তু তিনি জবাব না দেওয়ায় এসিজেএম হিল্লোল রায় ওই নির্দেশ দেন। সিএমওএইচ দেবাশিস হালদার বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনেই তদন্ত হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ১ এপিল রাতে আসানসোলের হাটন রোডের কাছে পূর্বাশা লেনে বাড়িতে ঢুকে এক মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেন এলাকার কিছু লোকজন। ওই যুবককে তার আগে জনতা মারধর করে বলে অভিযোগ। ধৃতকে পুলিশ আসানসোল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। ৩ এপ্রিল আসানসোল আদালতে তোলা হয় ধৃতকে। তখনই বিচারক জেলা হাসপাতালের চিকৎসক জয়ন্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া ‘ইনজুরি রিপোর্ট’ দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
অভিযুক্তের আইনজীবী সমীর ভট্টাচার্য জানান, ডাক্তারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ধৃতের শরীরের উপরে কোনও আঘাত নেই। তাকে আদালতে পেশ করা যেতে পারে। কিন্তু অভিযুক্তের ডান চোখে আঘাতের ছাপ রয়েছে দেখে বিচারক বিস্মিত হন। তিনি ওই চিকৎসককে ৬ এপ্রিলের মধ্যে এমন রিপোর্টের ব্যাখ্যা জমা দিতে বলেন। চিকিৎসক ব্যাখ্যায় জানান, আক্রান্তের চিকিৎসার পরে তাকে জিজ্ঞাসা করে জেনেছিলেন, সে সুস্থ। তাই ওই রকম রিপোর্ট দেন। সমীরবাবু জানান, এই জবাব দেখেও অসন্তুষ্ট হন বিচারক। নিয়ম মেনে কাজ না করার জন্য ১৩ এপ্রিলের মধ্যে চিকিৎসককে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু চিকিৎসক জয়ন্তবাবু কোনও জবাবদিহি করেননি। তাই সিএমওএইচ-কে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক।
জয়ন্তবাবু অবশ্য দাবি করেন, “আদালতের নির্দেশ মেনে ৬ এপ্রিল লিখিত জবাব দিয়েছি। তার পরে আর কোনও নির্দেশ আমি পাইনি। যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বলব।” সিএমওএইচ বলেন, “আদালতের নির্দেশ পেয়েই চিকিৎসককে দেখা করে বিষয়টি বিশদে জানাতে বলেছি।”