বারবার বেরিয়ে পড়ছে আগ্নেয়াস্ত্র

আমড়াইয়ে মঙ্গলবার রাতে ডিএসপি-র ফাঁকা জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে দু’রাউন্ড গুলি চলেছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৫
Share:

গত কয়েক মাসে বারবার গুলি চালানোর ঘটনা ঘটছে দুর্গাপুর মহকুমায়। প্রাণহানিও হয়েছে। ভোট ঘোষণার পরে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু করেছে। তা সত্ত্বেও এখনও বহু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি, মঙ্গলবার রাতে আমড়াইয়ের ঘটনা তার প্রমাণ, দাবি সিপিএমের। দ্রুত বেআইনি সব আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়ে বুধবার নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

আমড়াইয়ে মঙ্গলবার রাতে ডিএসপি-র ফাঁকা জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে দু’রাউন্ড গুলি চলেছে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম। শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, দুর্গাপুরে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের দাপাদাপি গত কয়েক মাসে বারবার দেখা গিয়েছে। তাঁরা এ নিয়ে আতঙ্কিত।

৯ মার্চ মাঝরাতে ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোনের আকবর রোড এলাকায় তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে এক জনের পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় গুলি। গুরুতর জখম হন তিনি। গত বছর ১৪ ডিসেম্বর সকালে কেব্‌ল ব্যবসা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে এক যুবক ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ রাখি তিওয়ারির নতুনপল্লির বাড়িতে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তবে সেক্ষেত্রে গুলি চলেনি। পুলিশের কাছে সে দাবি করে, ভয় দেখাতেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গিয়েছিল সে।

Advertisement

গত বছর ১৩ অগস্ট কলকাতা থেকে আসা সিআইডি-র একটি দল বেনাচিতি উত্তরপল্লির একটি বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে এবং ভিন্‌ রাজ্যের তিন জনকে গ্রেফতার করে। দুর্গাপুরের এক পরিচিত ব্যক্তিকে খুনের জন্য তারা কয়েক লক্ষ টাকার ‘সুপারি’ নিয়েছিল বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে জনবহুল এসবি মোড়ের কাছে জেসি অ্যাভিনিউয়ে একটি সোনার দোকানে কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে লুটপাট চালায় দুষ্কৃতীরা।

এর মধ্যে ৯ ডিসেম্বর রাতে কাঁকসায় জঙ্গলের রাস্তায় গুলিতে খুন হন বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষ। ১১ নভেম্বর দুপুরে এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় গোপালমাঠ লাগোয়া একটি বেসরকারি সিমেন্ট কারখানার পিছনে রেললাইনের ধারে। তাঁর গলার পিছনের দিকে গুলির চিহ্ন ছিল বলে দাবি করেন বাসিন্দারা। তার আগে ৭ মে সকালে প্রকাশ্যে দিনের আলোয় কোকআভেন থানার স্টেশন রোডে একটি পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় গুলিতে খুন হন পার্কিং জোনের এক কর্মী।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বারবার আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে পুলিশি নজরদারি নিয়ে। অজয় পেরিয়ে বীরভূম থেকে সহজেই এই জেলার কাঁকসা, লাউদোহা, পাণ্ডবেশ্বরে ঢোকা যায়। অথচ, ঘাটগুলিতে বা অজয়ের পাড়ে নজরদারিতে ঢিলেঢালা বলে বারবার অভিযোগ ওঠে। প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীরা এলাকায় যাতায়াত করে বলে অভিযোগ। অস্ত্র উদ্ধারে আরও পুলিশি তৎপরতা প্রয়োজন, দাবি শহরের অনেকের।

পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘বেআইনি অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করার জন্য জোরদার অভিযান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে নাকাবন্দি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন