গার্ডওয়াল নেই, দুই সেতুতে বাড়ছে বিপদ

আসানসোলের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের কাল্লামোড় থেকে সোজা উত্তর দিকে চলে গিয়েছে দোমহানি রোড। মোড় থেকে একশো মিটার এগোলেই মিলবে নুনিয়ার উপরে কাল্লা সেতু। ওই সেতুর দু’দিকে কোনও গার্ডওয়াল নেই

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৭
Share:

বাঁ দিকে, হাজিনগরে। ডান দিকে, কাল্লা সেতু। নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার রাতে সেতুতে ওঠার মুখ থেকে ক্যানালে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল দুই মোটরবাইক আরোহীর। এই ঘটনা সামনে আসার পরেই আসানসোলের কাল্লা রোড ও রেলপাড়ের হাজিনগরের বাসিন্দারাও আশঙ্কায় রয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, নুনিয়া নদীর উপরে এই দুই এলাকায় সেতু রয়েছে। কিন্তু তাতে গার্ডওয়াল নেই। অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে বিষয়টি বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি।

Advertisement

আসানসোলের ২ নম্বর জাতীয় সড়কের কাল্লামোড় থেকে সোজা উত্তর দিকে চলে গিয়েছে দোমহানি রোড। মোড় থেকে একশো মিটার এগোলেই মিলবে নুনিয়ার উপরে কাল্লা সেতু। ওই সেতুর দু’দিকে কোনও গার্ডওয়াল নেই। অথচ ফি দিন যাত্রীবোঝাই বাস, মোটরবাইক, স্কুটার-সহ কয়েক হাজার যানবাহন ওই সেতুটি ব্যবহার করে। সামনেই রয়েছে ইসিএলের কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতাল। এলাকায় রয়েছে একাধিক প্রাথমিক ও হাইস্কুল। ফলে রোগী, তাঁদের আত্মীয়, পড়ুয়ারাও ব্যবহার করেন সেতুটি। বারাবনি, দোমহানি, কেলেজোড়া, মাজিয়ারা, ভানোড়া-সহ প্রায় তিরিশটি গ্রামের লক্ষাধিক বাসিন্দা এই একটিই পথ ব্যবহার করেন।

শুধু যে গার্ডওয়াল নেই, তা-ই নয়। এলাকাবাসী জানান, সেতুতে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। ফলে অন্ধকার রাতে বিপদ এড়াতে সেতুর দু’দিকে গার্ডওয়াল দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। স্থানীয় একটি হাইস্কুলের শিক্ষক অতনু দত্ত বলেন, ‘‘গার্ডওয়াল না থাকায় গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করাটা ভয়ের।’’ গত বছরের ১০ অক্টোবর এই সেতুতে ফাটল ধরেছিল। প্রায় এক মাস সেতু বন্ধ রেখে কাজ হয়েছে। অতিরিক্ত পাঁচ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরে যাতায়াত করতে হয় এলাকাবাসীকে। কিন্তু তার পরেও সেতুতে গার্ডওয়াল তৈরি বা আলো বসানোর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

Advertisement

একই হাল আসানসোল পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রেলপাড় এলাকার হাজিনগর সেতুটিরও। এলাকার প্রায় ২৫ হাজার মানুষের একমাত্র যোগাযোগের রাস্তা সেতুটি দিয়ে। স্কুটার, মোটরবাইক চলাচল করে সেতুটি দিয়ে। স্থানীয় কাউন্সিলর নসিম আনসারি বলেন, ‘‘এক সময় লোহার গার্ডওয়াল ছিল। বছয় কয়েক আগে তা ভেঙে গিয়েছে।’’

যদিও বিষয়টি নিয়ে আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) কস্তুরী বিশ্বাস বলেন, ‘‘শুধু ওই দু’টি সেতুই নয়, জেলার সব সেতুরই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে। জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠির নির্দেশে পূর্ত দফতর-সহ অন্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

জেলা প্রশাসন জানায়, কাল্লা সেতুর খোলনলচে বদল করা হবে। এর জন্য আশি লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। মহকুমাশাসক (আসানসোল) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পুজোর পরে দুর্বল তপসি সেতু সংস্কারের কাজে হাত পড়বে।’’ হাজিনগর সেতুর প্রসঙ্গে পুরসভার চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল জানান, রেলপা়ড় অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নুনিয়া নদী ও তার উপরের সেতু সংস্কারের জন্য সেচ দফতরের কাছে দু’কোটি টাকার একটি প্রকল্প রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। তবে আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন