দ্বন্দ্বে চাষ বন্ধের ফরমান, নালিশ

এই পাঁচ জনই ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীর অনুগামী। তাঁদের দাবি, প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরার ঘনিষ্ঠ কয়েক জন ওই ফরমান জারি করেছেন। যদিও কারও নাম দিয়ে অভিযোগ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভাতার শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৭ ০১:১৩
Share:

এলাকা কাদের দখলে থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তার জেরে এক নেতার অনুগামীদের চাষ বন্ধের ফতোয়া দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের অন্য নেতার অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গত ২০ জুলাই টোটোতে মাইক লাগিয়ে ভাতার ব্লকের আমারুন ২ পঞ্চায়েতের পলসোনা ও কুবাজপুর গ্রামের পাঁচ তৃণমূল কর্মীর জমিতে চাষ করতে দেওয়া যাবে না বলে প্রচার করা হয়। ওই পাঁচ জনের জমিতে চাষ করতে গেলে এলাকার শ্রমিক থেকে ট্রাক্টর-মালিককে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। দশ দিন কেটে গেলেও ফতোয়া ওঠেনি।

Advertisement

কুবাজপুরের অধীর ঘোষ ২৭ তারিখ লিখিত অভিযোগ করেছেন ভাতারের বিডিও এবং পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতির কাছে। বাকি চার জন মৌখিক ভাবে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছেন। এই পাঁচ জনই ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীর অনুগামী। তাঁদের দাবি, প্রাক্তন বিধায়ক বনমালী হাজরার ঘনিষ্ঠ কয়েক জন ওই ফরমান জারি করেছেন। যদিও কারও নাম দিয়ে অভিযোগ হয়নি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, আমারুন ২ পঞ্চায়েতে দরপত্র-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে দুর্নীতি নিয়ে ঝামেলা চলছিল দুই নেতার অনুগামীদের। ১৯ জুলাই মানগোবিন্দ-গোষ্ঠীর মিছিলকে ঘিরে দু’পক্ষের মারপিট বাধে। অধীরবাবুর অভিযোগ, পরের দিন বিকেলে প্রাক্তন বনমালীবাবুর কিছু অনুগামী কুবাজপুরে টোটোয় চেপে মাইক ফুঁকে ফতোয়া দেন, ‘তৃণমূলের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হচ্ছে, কুবাজপুরের অজিত ও অধীর ঘোষের জমিতে যারা ধান রোয়াতে যাবে, তাদেরকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হবে’। লিখিত অভিযোগে অধীরবাবু জানিয়েছেন, ‘ট্রাক্টর নামানো যাবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে, গ্রামের কেউ ভয়ে আমাদের বাড়িতে বা খেতজমিতে কাজ করতে যাচ্ছে না।’

Advertisement

একই ফতেয়ার শিকার কুবরাজপুর লাগোয়া আরাচিয়া গ্রামের মোমিনুল হক, পলসোনা গ্রামের নুরজ্জামান আমেদ। নুরজ্জামান আবার আমারুন ২-এর সদস্যও। তাঁরা বলেন, “হুমকির ভয়ে চাষ শুরু করতে পারিনি। দলকে জানিয়েছি।” একমাত্র অজিতবাবু মুর্শিদাবাদ থেকে খেতমজুর আনিয়ে চাষের কাজ কিছুটা করেছেন। পূর্ব বর্ধমানের সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “চাষ কোনও মতেই বন্ধ করা যাবে না। বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।” বিডিও প্রলয় মণ্ডল বলেন, “পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে।”

অভিযোগ উড়িয়ে প্রাক্তন বিধায়কের দাবি, ফতোয়া দেওয়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। যদিও বনমালীবাবুর ঘনিষ্ঠ, ব্লক তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করছেন। তবে তাঁর দাবি, “তৃণমূলের নাম করে মাইকে যারা প্রচার চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন