পুনর্বাসন, জমির দাম চেয়ে খনির কাজ বন্ধই

পুনর্বাসন ও বাজারদরে জমির দাম মেটানোর দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন কেন্দার বাসিন্দারা। মঙ্গলবার জেলাশাসকের দফতরে যান ‘কেন্দা গ্রামরক্ষা কমিটি’র সদস্যেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৩
Share:

বন্ধ: নিউকেন্দায় দাঁড়িয়ে মাটি কাটার যন্ত্র। নিজস্ব চিত্র

পুনর্বাসন ও বাজারদরে জমির দাম মেটানোর দাবিতে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন কেন্দার বাসিন্দারা। মঙ্গলবার জেলাশাসকের দফতরে যান ‘কেন্দা গ্রামরক্ষা কমিটি’র সদস্যেরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নিখিল নির্মলের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তাঁরা। অন্য দিকে, নিউকেন্দা কোলিয়ারির প্যাচে এ দিনও কাজ বন্ধ থাকে।

Advertisement

কয়লা খননের জন্য খনিতে বিস্ফারণ ঘটানোয় ফাটল ধরে যাচ্ছে বাড়িতে, এই অভিযোগে সোমবার দুপুর থেকে ওই খনির কাজ বন্ধ করে দেন বাসিন্দারা। মঙ্গলবার গ্রামরক্ষা কমিটি বর্ধমানে জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে অভিযোগ করে, এর আগে ধসের জেরে বারবার বিপন্ন হয়েছে কেন্দা গ্রাম। পুনর্বাসনের জন্য ১৯৯৮ সালে নথিভুক্ত হওয়ার পরেও এখনও তা মেলেনি। গত বছর পুজোর পরে নতুন খোলামুখ খনি চালুর সময়ে বাজারদরের কম দামে ইসিএল জমি নিয়েছে বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের।

গ্রামবাসীদের দাবি, পুনর্বাসন ও বাজারদরে জমির দাম মিটিয়ে খনি চালু করুক সংস্থা। এ ছাড়া খনিতে বিস্ফারণের জেরে বাড়িতে ফাটল ধরায় আতঙ্কে এলাকা ছাড়তে হবে। ওই গ্রামরক্ষা কমিটির সম্পাদক বিজু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুনর্বাসন, জমির দামের পুনর্মূল্যায়ণ, বকেয়া চাকরির দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে খনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি মামলা চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, ১৯৮৯ সালে ইসিএল কর্তৃপক্ষ ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনি চালুর আগে গ্রামবাসীদের ১২ একর ৬৪ শতক জমি অধিগ্রহণ করেন। সংস্থার তৎকালীন নিয়ম অনুযায়ী ৮ জনকে চাকরি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি।

Advertisement

বিজুবাবুর আরও দাবি, ছ’মাস আগে নিউকেন্দা খোলামুখ খনি চালু হয়েছে। সে জন্য প্রয়োজন ৭৩০ একর জমি। ৯০ একর পেয়েছে সংস্থা। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতি একর জমি আড়াই লক্ষ টাকা ও দু’একর প্রতি এক জনকে চাকরি দিয়ে জমি নিতে চাইছে ইসিএল। অথচ, সংস্থা ২০১৫ সালের ১৯ অক্টোবর রাজ্যকে ৩ একর ৯৬ শতক জমির ক্ষেত্রে প্রতি একরে ৫৩ লক্ষ টাকা মিটিয়েছে। এ সবের প্রতিবাদে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই খনির কাজ চালু রাখতে ইসিএল অধিগ্রহণ না করেই জমিতে কয়লা কাটছে বলে অভিযোগ বিজুবাবুদের। তাঁদের ক্ষোভ, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বিস্ফোরণের জেরে বারবার বাড়িতে ফাটলের ঘটনা।

গ্রামবাসীদের বারবার প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জেরে কাজে বিঘ্ন ঘটছে খনিতে। বাসিন্দাদের অভিযোগগুলি নিয়ে ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে।” জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘দাবিগুলি দেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন