100 Days Work

মজুরি মেটাতে হবে দ্রুত, ময়দানে জেলা প্রশাসন

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় জবকার্ড রয়েছে ১,৪০,১০৫ জনের। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে বকেয়া মজুরির পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মজুরি মেটাতে হবে দ্রুত, ময়দানে প্রশাসন একশো দিনের কাজ প্রকল্পে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজ্য সরকার মিটিয়ে দেবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই রাজ্যের সব জেলায় শুরু হয়েছে ওই প্রকল্পের শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখার কাজ। হাতে রয়েছে মাত্র দশ দিন। তাই সময়ের সঙ্গে কার্যত যুদ্ধ করে শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখার কাজ করছেন জেলার আধিকারিকেরা।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় জবকার্ড রয়েছে ১,৪০,১০৫ জনের। একশো দিনের কাজ প্রকল্পে বকেয়া মজুরির পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি টাকা। ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির সম্প্রসারিত করে ‘সমস্যা সমাধান জনসংযোগ শিবির’ চলছে পঞ্চায়েত স্তরে। এই শিবিরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে একশো দিনের কাজ প্রকল্পের নিরীক্ষণ (ভেরিফিকেশন) প্রক্রিয়াকে। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রয়েছে কিনা, তা দেখা হবে। নিরিক্ষণের কাজ তদারকি করছেন পঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরের আধিকারিকেরা। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্ট সক্রিয় না নিষ্ক্রিয়, তা ‘মাস্টার রোল’-এর তালিকা ধরে খতিয়ে দেখছেন প্রতিটি পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক।’’

জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত, ব্লক ও জেলা প্রশাসন স্তরের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়েও ১০০ দিনের কাজের নিরীক্ষণ করছেন। ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দেওয়া হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই একটি নির্দেশিকা জারি করে নবান্ন। তাতে বলা হয়েছে, মজুরি মেটানোর গোটা প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা’ বজায় রাখতে হবে। সতর্কতা মেনে শ্রমিকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করতে হবে। ‘ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার’ দেখে ‘ড্রাফ্ট ওয়েজ পেমেন্ট লিস্ট’ (মজুরি মেটানো সংক্রান্ত খসড়া তালিকা) তৈরি করতে হবে। সেই তালিকা পাঠাতে হবে প্রত্যেক পঞ্চায়েতে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সেই তালিকা যাচাই করা হবে। প্রকৃত শ্রমিকদের চিহ্নিত করা এবং ভুয়ো থাকলে তাদের বাদ দেওয়া হবে। বিডিও-দের বলা হয়েছে, এই কাজের জন্য প্রত্যেক পঞ্চায়েতে দল গঠন করতে হবে। কোন কাজ কত দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে তা-ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

Advertisement

রানিগঞ্জের তৃণমূল পরিচালিত তিরাট পঞ্চায়েতের প্রধান শিবদাস চট্টোপাধ্যায় ও সিপিএম পরিচালিত আমরাসোঁতা পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় হেমব্রম জানান, ‘‘প্রায় আড়াই বছর ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় অনেকে ব্যাঙ্কে লেনদেন করেননি বলে মনে হয়েছিল। তবে দেখা যাচ্ছে, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু হওয়ায় মহিলাদের প্রায় সকলেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রয়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় রয়েছে, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের এমন শ্রমিকের সংখ্যাও অনেক কম।’’

তিরাট পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সুমিত্রা বাউরি ও আমরাসোতা পঞ্চায়েতের মালতি টুডু লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মজুরিও বকেয়া রয়েছে। দুই শ্রমিকের কথায়, ‘‘এত দিন বন্ধ থাকা একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা পাব শুনে খুবই আনন্দ হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ চালু হলে আরও খুশি হব।’’

সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘একশো দিনের কাজ প্রকল্পের বকেয়া টাকা পাওয়া দরকার। রাজ্য সরকার যদি মজুরি মিটিয়ে দেয়, তা হলে বামেদের দীর্ঘ আন্দোলনের জয় হবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শ্রমজীবী মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণের কারণে শ্রমিকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন , ‘‘রাজ্য বাজেটে বছরে ৫০ দিন কাজ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে একশো দিনের প্রকল্পের বকেয়া ও বছরে ৫০ দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা কোথা থেকে আসবে, সে দিশা বাজেটে দেখানো হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন