একশো দিনের মজুরি বাকি, বাড়ছে ক্ষোভ

জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, এ রাজ্যে জলপাইগুড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় একশো দিনের কাজের প্রস্তাবিত ‘লেবার বাজেটে’র চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়েছে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

উৎসবের মরসুমের আগে বকেয়া মজুরি পেয়ে যাবেন, ভেবেছিলেন অনেকেই। কিন্তু একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের এই আশা মিটছে না। পুজোর আগে বকেয়া মজুরি মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিতে পারছে না পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। এর জেরে বিভিন্ন পঞ্চায়েতেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। মজুরির দাবিতে নানা এলাকায় রাস্তায় নেমেছেন শ্রমিকেরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা জেলায় তিরিশ কোটিরও বেশি টাকা মজুরি বাকি রয়েছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি, এ রাজ্যে জলপাইগুড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় একশো দিনের কাজের প্রস্তাবিত ‘লেবার বাজেটে’র চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়েছে। সে জন্য এ রাজ্যের ‘লেবার বাজেট’ও বেশি দেখাচ্ছে কেন্দ্রের খাতায়। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেন্দ্রের একটি দল ওই সব জেলায় গিয়ে ‘লেবার বাজেট’ কী কারণে বেশি হল তা দেখবে। তার পরে রাজ্যের অ্যাকাউন্টে এই প্রকল্পের টাকা আসবে বলে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।’’ ওই কর্তার ক্ষোভ, ‘‘১৫ দিনের টাকার ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার (এফটিও) বাধ্যতামূলক করছে কেন্দ্র। অথচ, শ্রমিকদের মজুর দিতে গিয়ে নানা রকম টালবাহানা শুরু করেছে। প্রশাসনিক বৈঠকে আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে।’’

জেলার একশো দিন প্রকল্পের নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য ওই চিঠির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ২০ লক্ষ শ্রম দিবসের জন্য ৩৪ কোটি টাকা পাব। ৫ জুন জেলার অ্যাকাউন্টে শেষ টাকা এসেছিল। আশা ছিল, পুজোর আগে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে মজুরি দেওয়া যাবে। কিন্তু ওই চিঠি পাওয়ার পরে সব রকম আশাই শেষ হয়ে গেল।’’

Advertisement

সাধারণত কাজের দু’তিন মাস পরে বকেয়া মজুরি পান একশো দিন প্রকল্পের কর্মীরা। কিন্তু টাকা না আসায় জেলার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। খণ্ডঘোষ থেকে মঙ্গলকোট, বর্ধমানের বেলকাশ থেকে কালনার সুলতানপুর, বিভিন্ন পঞ্চায়েতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন শ্রমিকেরা। বেশ কিছু জায়গায় পথ অবরোধও হয়েছে। প্রত্যেকেরই প্রশ্ন, পুজো বা মহরমের আগে কি মজুরি মিলবে না?

মঙ্গলকোটের উপপ্রধান শান্ত সরকার, বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী ফাল্গুনী দাস রজকেরা বলেন, ‘‘উৎসবের আগে শ্রমিকেরা তো মজুরি চাইবেনই। বারবার দাবি করেও টাকা মিলছে না। দফতর তো বটেই, রাস্তাঘাটেও আমাদের চেপে ধরছেন শ্রমিকেরা।’’ মেমারির বিধায়ক নার্গিস বেগমের কথায়, ‘‘পঞ্চায়েতের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হওয়ার জন্য মজুরির দাবিতে আমাকেও চিঠি দিয়েছেন শ্রমিকেরা। জেলা ও রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন