‘শাস্তি’ হোক ছবি আঁকা, মত শিক্ষকদের

ক্লাসে পড়া না পারলে শাস্তি কী? কোনও বকাঝকা নয়। বরং সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে আঁকতে দেওয়া হোক তিনটি পশুর ছবি। প্রাথমিক স্তরে ক্লাসকে আরও আকর্ষণীয় করতে এমনই সব নানা অভিনব ‘পদ্ধতি’র প্রস্তাব উঠে এল কাটোয়ার জগদানন্দপুরে আয়োজিত একটি আলোচনাসভায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৯
Share:

উদ্যোগ: শিক্ষকদের চারাগাছ বিলি। নিজস্ব চিত্র

ক্লাসে পড়া না পারলে শাস্তি কী? কোনও বকাঝকা নয়। বরং সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে আঁকতে দেওয়া হোক তিনটি পশুর ছবি। প্রাথমিক স্তরে ক্লাসকে আরও আকর্ষণীয় করতে এমনই সব নানা অভিনব ‘পদ্ধতি’র প্রস্তাব উঠে এল কাটোয়ার জগদানন্দপুরে আয়োজিত একটি আলোচনাসভায়।

Advertisement

কাটোয়া পূর্ব চক্র আয়োজিত ওই সভায় বুধবার যোগ দেন বিডিও শিবাশিস সরকার, স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ, মানবেন্দ্র ঘোষ ও কাটোয়া ২ ব্লকের ৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত নাদনঘাট রামপুরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক অরূপ চৌধুরী।

এনসিইআরটি প্রকাশিত ‘ন্যশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক, ২০০৫’-এ শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। তা অনুযায়ী পড়াশোনা শুরুও হয়েছে। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের আক্ষেপ, সব ক্ষেত্রে এখনও প্রস্তাবের বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এ দিন বক্তারা সেই প্রসঙ্গটির কথা বলেন।

Advertisement

ক্লাসে পড়ুয়ারা পড়া না পারলে বকাঝকার বদলে ‘মজাদার শাস্তি’ দেওয়ার প্রস্তাব দেন অরূপবাবু। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘ক্লাসে কোনও ছাত্র দুষ্টুমি করলে ‘শাস্তি’ হিসেবে তাকে তিনটি যে কোনও পশুর ছবি আঁকতে দেওয়া যেতে পারে। এমনটা চলতে থাকলে পড়ুয়ারাও ক্লাসকে উপভোগ করবে।’’ এ ছাড়া প্রতি দিন একটি পড়ুয়া কোনও শিক্ষামূলক কাজ করছে কি না, তার হিসেব রাখতে ‘তোদের ভালো কথা’ নামে একটি খাতা তৈরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অরূপবাবুর দাবি, ‘‘এই পদ্ধতি অনুসরণের ফলে কালনা মহকুমার বেশ কিছু স্কুল উপকৃত হয়েছে।’’

এ ছাড়া প্রাথমিক স্তরে ‘সহজ পাঠে’র গুরুত্ব আরও বেশি করে বোঝানো, কাছের কোনও জায়গায় শিক্ষামূলক ভ্রমণ, ভাষাশিক্ষার মান বাড়ানো, সাংস্কৃতিক চর্চায় জোর দেওয়া-সহ নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন নবদ্বীপ বকুলতলা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম ও অরূপবাবু।

মিড-ডে মিলের খাবারের মান, কম খরচে কী ভাবে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া যায়, তা ঠিক করতে প্রতি মাসে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ডিজিট্যাল ক্লাসঘর তৈরি, কম্পিউটার ব্যবহার করলে ক্লাসের প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়বে বলে দাবি শিক্ষকদের।

ওই সভায় প্রতি শিক্ষককে তেজপাতার চারা দেওয়া হয়েছে। কেন? স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এর ফলে বৃক্ষরোপণ, ঝরা পাতা কী ভাবে রান্নার কাজে লাগবে, তা-ও শিখবে পড়ুয়ারা।’’ প্রশিক্ষণ পেয়ে খুশি গাজিপুরের ব্রতীশঙ্কর দাস, করুই দক্ষিণপাড়ার অভিজিৎ গুপ্তদের মতো শিক্ষকেরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন